বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-বিনা অনুমতিতে হাসপাতাল চত্বরে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল করার অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমানে। শনিবার সকালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিনা অনুমতিতে বর্ধমান রাজ কলেজের ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল করেন। হাসপাতালের ভেতর এভাবে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল কিভাবে করা হল তা নিয়েই শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। খোদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা. উত্পল দাঁ জানিয়েছে্ন, এই ধরণের বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য কোনো অনুমতিই দেওয়া হয়নি। গোটা বিষয়টি পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে। এদিন বর্ধমান রাজ কলেজের ছাত্র খোন্দেকার সুজাউদ্দিন অভিযোগ করেছেন, বেশ কিছুদিন থেকেই তাঁরা দেখছেন এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঠিকমত চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন না। অন্যান্য জেলার রোগীরা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন সুজাউদ্দিন। এ ব্যাপারে এর আগেও তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। তাই এদিন ফের তাঁরা অভিযোগ জানাতে এসেছেন। হাসপাতাল সুপার ডা. উত্পল দাঁ জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে ওই ছাত্রটি হাসপাতালের নার্সের সংগে দুর্ব্যবহার এবং এক চিকিৎসককে মারধর করায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করে। সুপার জানিয়েছেন,কিভাবে অনুমতি ছাড়াই হাসপাতালের ভেতর মিছিল করা হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের ভেতর প্ল্যাকার্ড নিয়ে এভাবে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখানোর বিষয়ে সুজাউদ্দিন জানিয়েছেন, তাঁরা লিখিত কোনো অনুমতি না নিলেও মৌখিকভাবে হাসপাতাল সুপারকে জানিয়েছিলেন। যদিও হাসপাতাল সুপার ডা. উত্পল দাঁ এই ধরণের কোনো কথাই হয়নি বলে সাফ জানিয়েছেন। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, এদিন বর্ধমান রাজ কলেজের ছাত্র খোন্দেকার সুজাউদ্দিনএকটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁর দাবীর বিষয় নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে সুজাউদ্দিন তাঁর বাবার চিকিত্সা ঠিকমত হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে ওয়ার্ডের ভেতর এক নার্সের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এই ঘটনায় ওই ওয়ার্ডের সেইসময় কর্তব্যরত চিকিত্সক তুষার মণ্ডল সুজাউদ্দিনের ব্যবহারের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও বচসা বাধে। ওই চিকিত্সককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুজাউদ্দিনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরেও রিপোর্ট পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ধারসোনা গ্রামের বাসিন্দা খোন্দেকার সুজাউদ্দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্ট গ্রাজুয়েটে ইংরাজী বিভাগের ছাত্র। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। এই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিসেবা ঠিক করার পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ঘটা ঘটোনার ন্যায় বিচার হোক বলে আবেদন করেছেন খোন্দেকার সুজাউদ্দিন।