বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রীতিমত নজীরবিহীন শল্য চিকিত্সায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সকরা। বাবার বকাবকির জেরে আত্মহত্যার জন্য ১৯ বছরের কিশোর বিমল পাল বেছে নিয়েছিল সিমেণ্ট এবং পুট্টি নামক জমাটবাঁধার মণ্ড। আর তারপরই শুরু হয় তার পেটে যন্ত্রণা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার বাবুদহ গ্রামের বাসিন্দা মৃত্শিল্পী ধীরেন পাল তাঁর ছেলে বিমল পালকে গত শনিবার বকাবকি করেন। আর তারপরেই অভিমানে সিমেণ্ট এবং পুট্টি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ছেলে বিমল পাল। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় তার পেটে যন্ত্রণা। শুরু হয় বমিও। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মুরারই গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয় তাকে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাকে বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু কিশোরের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় তাকে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার দুপুরে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। তাকে তিনদিন অবজারভেশন রুমে রেখে দেওয়া হয়। এরপরই বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০জনের একটি মেডিকেল টিম গঠন করে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশন করে প্রায় ২ কেজি ওজনের সিমেন্টের জমাট পাথর বের করেন দশ জনের চিকিৎসকের টিম। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক স্নেহাংশু পান জানিয়েছেন, এই অপারেশন একেবারেই বিরল। কারণ আত্মহত্যার জন্য সিমেন্ট খেয়ে নেওয়া এবং পাকস্থলীতে জমাট বাঁধা অবস্থায় সেখান থেকে রুগীকে বাঁচানো রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান হাসপাতালকে অবহেলা করে অনেকেই কলকাতা ও ভিলোরে যান। কিন্তু বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি বিরল অপারেশন করার পর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুনাম আরও বেড়েছে। চিকিৎসক রাজীব দত্ত, ঋতুপর্ণা রায়, তিরোবত সিনহা এই অপারেশনে খুশি। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা. উৎপল দাঁ এই অপারেশনের পর অভিনন্দন জানিয়েছেন হাপাতালের চিকিৎসকদের। এর পাশাপাশি বিমল পালের পরিবারের সদস্যরাও খুশি।