বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- হকার উচ্ছেদ নিয়ে এবার বর্ধমানে হকারদের পাশে এসে দাঁড়ালো এসইউসিআই (সি)। সোমবার বর্ধমানের জেলখানা মোড় থেকে পার্কাসরোড মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০০ দোকান উচ্ছেদের পর মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হল বর্ধমান পুরসভায়। জানা গেছে, পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অন্যদিকে, সোমবার হকার উচ্ছেদের ঘটনায় মঙ্গলবার ৬ দফা দাবিতে বর্ধমান সদর মহকুমা শাসক উত্তর তীর্থংকর বিশ্বাসকে স্মারকলিপি দিল এসইউসিআই (সি) বর্ধমান শহর লোকাল কমিটি। বর্ধমান শহর লোকাল কমিটির সম্পাদিকা ঝর্না পাল বলেন, আজকে যারা হকারি পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের জীবন জীবিকা সন্তানের শিক্ষা পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা সবকিছুই হকারীর উপর নির্ভর করে। একদিকে কর্মসংস্থানের অভাব, অন্যদিকে শাসকদলের মদতপুষ্টে অনিয়ন্ত্রিতভাবে হকারদের বসানো হয়েছে। তার ফলে সাধারণ পথচারীর চলাফেরা আজ প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু আজ যেভাবে বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা বা হকার জোন না করে হকার উচ্ছেদ করা হচ্ছে তাতে লক্ষ লক্ষ পরিবার জীবিকাচ্যুত হয়ে মৃত্যুর পথে পতিত হবেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর একমাস উচ্ছেদ বন্ধ রেখে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপকেও মানা হচ্ছে না। ২০১৪ সালের হকার আইনকেও মানা হচ্ছে না। তিনি জানিয়েছেন, এদিন প্রশাসনের কাছে ৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, বিকল্প ব্যবস্থা না করে হকার উচ্ছেদ করা যাবে না। অবিলম্বে হকার জোন গঠন করতে হবে। হকারদের পরিচয়পত্র দিতে হবে। টাউন ভেন্ডিং কমিটিতে সমস্ত হকার সংগঠন ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির প্রতিনিধি রাখতে হবে। ২০১৪ হকার আইন অনুযায়ী ফুটপাতে এলাকায় এক তৃতীয়াংশ অংশে হকারি করতে দিতে হবে। অবিলম্বে ২০১৪ জাতীয় হকার আইন লাগু করতে হবে। ঝর্ণা পাল জানিয়েছেন, এদিন মহকুমাশাসক তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, আপাতত বর্ধমান শহরে এক মাস উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকবে এবং হকারদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদিও এদিন বর্ধমান পুরসভায় বৈঠক শেষে পুরপ্রধান পরেশ সরকার জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত বর্ধমান শহরে কোথায় কি অবস্থায় হকার বা সরকারি জমি জবরদখল রয়েছে সেগুলি সার্ভে করা হবে। সার্ভে রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছেন, জেলাশাসকের অনুমোদন ছাড়া এই সময়কালে হকার উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে, এদিন সিটু বর্ধমান ১ ও ২ এরিয়া কমিটি-সহ কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের উদ্যোগে হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সভা ও মিছিল করা হয়। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন সিটু পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম। সিপিআই(এমএল) লিবারেশন নেতা কুনাল বক্সী এবং বিগ বাজার চত্বরের হকার শেখ আসরাফুল। উপস্থিত ছিলেন জেলা নেতৃত্ব সৈয়দ হোসেন, তাপস সরকার, স্ট্রিট হকার্স ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী।