বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রেল লাইনের পাশ থেকে এক গৃহবধূ ও যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান-হাওড়া রেলপথে শক্তিগড় ও গাংপুরের মাঝামাঝি জায়গায় ডাউন মেইন লাইনের পাশে মৃতদেহ দু’টি পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। ট্রেনের গার্ড বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর পেয়ে জিআরপি দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে জিআরপির অনুমান। আত্মহত্যার পিছনে প্রণয়ঘটিত কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছে জিআরপি। হাওড়া স্টেশন থেকে বুধবার রাত ১টা নাগাদ তাঁরা লোকাল ট্রেনের টিকিট কেটেছিল বলে জানতে পেরেছে জিআরপি। মৃতদের নাম সুজাতা দাস (২২) ও প্রভাস দাস (২২)। হুগলির আরামবাগ থানার মইগ্রামে তাঁদের বাড়ি। পাশাপাশি বাড়িতে থাকতেন তারা। রায়নার সেহারাবাজারে সুজাতার বাপেরবাড়ি। বছর চারেক আগে তার বিয়ে হয়েছিল। প্রভাস কলকাতার বরাহনগরে একটি সোনা-রুপোর দোকানে কাজ করতেন। জিআরপি ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর থেকে সুজাতাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বাপেরবাড়ির তরফে আরামবাগ থানায় ডায়েরি করা হয়। সেদিন থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না প্রভাসেরও। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়েও দোকানের মালিক স্থানীয় থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। সুজাতার খোঁজ না পেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রভাসকে ফোন করেন। সুজাতা তাঁর কাছে গিয়েছেন কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। তার কাছে সুজাতা আসেন নি বলে জানিয়ে দেন প্রভাস। তারপর থেকে সুজাতা এবং প্রভাসের মোবাইল বন্ধ ছিল। বুধবার প্রভাস তার এক বন্ধুকে ফোন করে বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে ১ লক্ষ টাকা চান। এদিন সকালে সেই টাকা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বন্ধুর। সুজাতার স্বামী প্রসেনজিৎ পেশায় রাজমিস্ত্রি। ৪ বছর বিয়ে হলেও তাদের কোনও সন্তান নেই। প্রসেনজিৎ বলেন, শনিবার রাতে স্ত্রী আমার কাছেই ঘুমিয়েছিল। পরেরদিন সকালে স্ত্রীকে দেখতে পাইনি। স্ত্রীর সঙ্গে প্রভাসের কোনও সম্পর্ক ছিল বলে জানা ছিল না। তাদের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর দু’জনের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। প্রভাসের বাবা সন্তোষ দাস বলেন, ছেলের সঙ্গে সুজাতার সম্পর্ক ছিল বলে জানতাম না। যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে প্রভাসের সঙ্গে সুজাতার সম্পর্কের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। প্রভাসের পরিবারের লোকজন সুজাতার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এনিয়ে তাকে সতর্ক করেন।