E Purba Bardhaman

সিসিটিভির সাথে সাউণ্ড রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থা করার প্রতিবাদে শিক্ষিকারা স্টাফরুম বয়কট করে গাছের নিচে বসলেন

Teachers protest against installation a sound recorder with CCTV cameras in the staffroom. Teachers sit in the under the tree outside the staff room. Burdwan Municipal Girls' High School.

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-  একদিকে নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকারী নির্দেশিকা মেনে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশঅন্যদিকে সিসিটিভির সাথে সাউণ্ড রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থা থাকায় ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুলে। শিক্ষিকাদের রুমে সিসিটিভি লাগানোর পাশাপাশি  সাউণ্ড রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থা থাকায় প্রতিবাদে স্টাফরুম বয়কট করে গাছতলায় বসে কাটাতে শুরু করেছেন স্কুলের প্রায় ২০ জন শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মী। এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কৌতূহল বেড়েছে অভিভাবকদেরও। উল্লেখ্যসরকারী নির্দেশে প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্রে সিসিটিভি লাগানো বাধ্যতামূলক। বিশেষত নানাভাবে যৌন হেনস্থার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যাপারে সরকারও কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু এবার সেই সিসিটিভির সংগে  সাউণ্ড রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থা থাকার ঘটনায় আন্দোলনে নামলেন বর্ধমান শহরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুলের প্রায় জনা কুড়ি শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষক কর্মচারীরা।  আন্দোলনরত শিক্ষিকা তন্দ্রিমা সরকারমীনা মুর্মু  প্রমুখরা অভিযোগ করেছেনস্কুলে সিসিটিভি লাগানো নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু শিক্ষকদের স্টাফরুমে সিসিটিভির পাশাপাশি সাউণ্ড রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থা কতায় তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করেছেন প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিক। এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে তারা ইতিমধ্যেই জেলাশাসকজেলা স্কুল পরিদর্শক সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগও জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেনস্কুলের মিড ডে মিলের জায়গায় কিংবা খাবারের জায়গায় সিসিটিভি লাগানো জরুরি হলেও তা লাগানো হয়নি। এমনকি স্টাফ রুমে সাইন্ড ক্যাচার লাগানোর বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটিতে কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি বলে দাবী করেছেন আন্দোলনকারীরা। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা স্টাফরুমে বসার পরিবর্তে স্কুলের গেটের পাশে আমগাছের তলায় বসে কাজ করছেন। বয়কট করেছেন স্টাফ রুম। যদিও এব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিক জানিয়েছেনএই স্কুলে প্রায় ৬০ শিক্ষক শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন। স্কুলের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্যই সরকারের বিশাখা কমিটির সুপারিশ মেনেই তারা সিসিটিভি এবং সাউন্ড ক্যাচার লাগিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেনএই স্কুলে প্রায় ২২০০ ছাত্রী রয়েছে।  প্রধান শিক্ষিকার দাবীএর আগেও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ওপর দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রমাণ অভাবে কোনো ব্যবস্থা তারা নিতে পারেন নি। তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে স্কুলের সহ শিক্ষিকা ফাল্গুনী দাস প্রধান শিক্ষিকার পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন২০১৭ সালে তিনি হেনস্থা হয়েছিলেন। সে ব্যাপারে দুজনের নামে অভিযোগও তিনি করেছিলেন। কিন্তু সে সময় সিসিটিভি না থাকায় তিনি সেই সুবিধা পাননি। তিনি জানিয়েছেন,সিসিটিভি লাগানো বা সাউণ্ড ক্যাচার লাগানোর ক্ষেত্রে যাঁরা যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁরা কেন তা করছেন তাঁরাই জানেন। কিন্তু তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছেন এটা অত্যন্ত জরুরী। একই কথা বলেছেনশিক্ষিকা দীপালী গোস্বামীও। তিনিও জানিয়েছেনস্কুলের সিংহভাগ শিক্ষিকাই বিষয়টিকে গ্রহণ করেছেনতাহলে বাকিদের অসুবিধা কোথায়। অন্যদিকে,আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেনঅনেক সময়ই তাঁর ক্লাসের ফাঁকে এসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানশিক্ষিকা সেগুলিতেও নজরদারী শুরু করায় কার্যত তাঁদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছেন। 

Exit mobile version