“গুন্ডাদের বলে দিন দিলীপ ঘোষ এসে গেছে” হুঙ্কার বিজেপি প্রার্থীর
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আগামী পঞ্চায়েত ভোটে গুন্ডারা বাড়ি থেকেই বের হতে পারবে না। সোমবার সকালে বর্ধমানের তেলিপুকুর এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে এই হুঁশিয়ারি দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও পঞ্চায়েতে বিজেপি জিততে পারে না কেন। তার উত্তরে তিনি বলেন, পঞ্চায়েতে এখানকার পুলিশ দিয়ে গুন্ডা দিয়ে ভোট লুট করা হয়। পরের পঞ্চায়েতে দেখবেন বাড়ি থেকে বের হতে দেব না গুন্ডাদের। কি সিস্টেমে হবে তা এখন থেকে বলবো না। দেখতে পাবেন। বুঝতে পারবেন ঠিক। এদিন তিনি বলেন, মানুষ দেখছে। কে কোথায় আছে। আগেও লোকে জিতিয়েছে। এবারও জেতাবে। ওরা গুন্ডাদের দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। ফোন করছে। আমিও দেখছি কে কী করছে। আমি পাঁচ বছর থাকার জন্য এসেছি। তারপরও দেখা হবে এদের সঙ্গে। এদিন বিজেপি সমর্থকরা তাঁকে অলরাউন্ডার বলায় দিলীপ ঘোষ বলেন ব্যাট, বল, রাজনীতি, ক্যারাটে সব করেছি। এখনো করি। সেজন্য আমার সামনে আসতে ভয় পায়। প্রায়শই বলা হয় বিজেপির ভোটার থাকলেও সব বুথে কর্মী না পাওয়ায় হারতে হয় বিজেপিকে। এব্যাপারে তিনি বলেন, বুথে শুধু বসবে না বুথ সামলাবে। বাইরে থেকে যদি কেউ যায় সে কীভাবে ফিরে আসবে সেটা আমরাই ঠিক করে নেব। বিগত নির্বাচনে বিজেপি কর্মীরা মার খেলেও কেউ পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বুথে কেউ মার খায়নি। বুথের বাইরে গন্ডগোল হয়েছিল। এবারে সেটা হতে দেব না। দিলীপ ঘোষ এসেছে তো। বলে দেবেন ওদেরকে। দিলীপ ঘোষ যেখানে যায় সেখানে মূল শুদ্ধ উপড়ে ফেলে। দরকার হলে মেদিনীপুরে ফোন করে জেনে নিন। উত্তরবঙ্গে প্রচারে বেড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোন প্রচার করলেন না, আদিবাসীদের সঙ্গে শুধু নাচায় কটাক্ষ করেছেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, ওদের লোকজনদের ডাকতে গেলে নাচানাচি করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীও নাচেন। এখানকার ক্যান্ডিডেটও নাচছেন। নাচানাচি করে ম্যাজিক করে ওদের লোক জড়ো করতে হচ্ছে। আর আমাদের দেখলেই লোক রাস্তায় চলে আসছে। এটাই পার্থক্য। তিনি বলেন, আমরা তো প্রচারই করিনি কোথাও। আমরা কোথাও প্রচার করছি নাকি? এখানে ক্রিকেট খেলছি। তাতেই লোক এসে যাচ্ছে। ওরা টাকা পয়সা দিয়ে রোড শো করছে। ঘোড়া ভাড়া করছে। আমাদের তাও করতে হয়নি। বিজেপির রোড শো সম্পর্কে দিলীপবাবু এদিন বলেন, যখন হবে দেখতে পাবেন ওরা আগে সব করে নিক। যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে, তখন আমরা রাস্তায় নামবো। উল্লেখ্য, তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৮ তারিখ বর্ধমানে কর্মীসভা করতে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৮ তারিখ জামালপুরে রোড শোও করবেন অভিষেক। আগামী ২৪ তারিখ আউশগ্রাম এবং বুদবুদে জোড়া নির্বাচনী সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এব্যাপারে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, শুধু মমতা বা অভিষেক নয় সারা ভারতবর্ষের আরও নেতারা আসুক। সবাইকে নিয়ে আসুক দিলীপ ঘোষ একাই যথেষ্ট। যদিও তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সমর্থনে দিল্লি থেকে তো কেউ আসবেই কেন্দ্রীয় নেতারা। তখন সভা করব। বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ৭ কিংবা ৯ মে বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে নির্বাচনী সভা করতে আসতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এরই মাঝে আসতে পারেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অপরদিকে বিজেপির আভ্যন্তরীণ কোঁদল নিয়ে তিনি বলেন, এসব নিয়ে আপনাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আমাদের মধ্যে কোনও ক্ষোভ নেই। টিএমসির সঙ্গে গুন্ডা আছে, পুলিশ আছে। যে বুথে যাবে সেখানে দশটা লোক আমার সঙ্গে থাকবে। আমার সঙ্গে বের হবে। কেউ একজন বলে দিক আমার সঙ্গে বের হচ্ছে না। যে বের হচ্ছে না সে বিজেপি নয়। সে কেন বিজেপির হয়ে বের হবে। বিজেপির লোক হলে বিজেপির হয়ে বের হবে। টিএমসি কংগ্রেস কেন বের হবে। তিনি এদিন ইঙ্গিতপূর্ণভাবেই বলেন, এপ্রিল মাসের পর থেকে টিএমসি কংগ্রেস সব বিজেপির হয়ে বের হবে। সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে তিনি বলেন, সেন্ট্রাল পুলিশেরও তো চোখ কান আছে। তাদেরও অবজারভার আসছে। আমরা সেন্ট্রাল পুলিশের জোরে ভোট করি না। সেন্ট্রাল পুলিশ তাদের কাজ করবে। সাধারণ মানুষ যাতে বেরিয়ে এসে ভোট দেয় সেই জন্য সেন্ট্রাল ফোর্স রাখা। সাধারণ মানুষের জন্য সেন্ট্রাল ফোর্স। বিজেপির ভোট বিজেপির কর্মীরাই করবে। বিধানসভায়, লোকসভায় আমরা দেখিয়েছি। মানুষ বেরিয়ে এসে ভোট নিশ্চয়ই দেবে। অন্যদিকে, রবিবার ঘটা করে বাংলার জন্মদিন পালন করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে দিলীপবাবু বলেন, বাংলাকে উনি জন্ম দিয়েছেন নাকি? এ বাংলা কবে কার, কার আমলে শুরু হয়েছে ও সব উনি জানেন? যেখানে সেখানে ঢুকে যা ইচ্ছা বলে দিলে হবে নাকি। সব কাটমানি, লুটপাট চলছে। আর রাস্তায় হাঁটছেন টাকা দাও টাকা দাও করে। সারা জীবনটাই কাটিয়ে দিলেন দাও দাও করে।