E Purba Bardhaman

অর্থ তছরুপের অভিযোগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই-এর বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা, ধস্তাধস্তি

Tension over SFI's protest at Burdwan University over money embezzlement

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এসএফআই-এর ডেপুটেশনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার এসএফআই-এর সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দরজা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিক্ষোভ চলার সময় উপাচার্য অফিসে ঢুকতে গেলে বাধা পান। আর এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের সাথে ঠ্যালাঠেলিতে জড়িয়ে পড়েন এসএফআই-এর কর্মী সমর্থকরা। এই ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারের সই জাল করে প্রায় ২ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙিয়ে নিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা সামনে আসে। এরপরই টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ও তদন্তের দাবিতে আন্দোলনে নামে এসএফআই। একইসঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটি তৈরি করেছেন কর্মীরা। তাঁরাও পৃথকভাবে আন্দোলনে নেমেছেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের পক্ষ থেকেও অর্থ তছরুপের ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত চেয়ে উপাচার্যকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, টাকা কোথায় গেল? -এই প্রশ্ন তুলে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় চলো অভিযানের ডাক দেওয়া হয় এসএফআই-এর পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির পক্ষ থেকে। এদিন বর্ধমানের কার্জনগেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মিছিল করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অফিসে ঢোকার মুখে গেট বন্ধ থাকায় গেটের সামনেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পরেন তাঁরা। তাঁদের দাবি উপাচার্যকে দেখা করতে হবে। প্রায় ৩০ মিনিটের ওপর তাঁদের এই অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে উপাচার্য আসেন এবং ঢুকতে গেলে বাধা দেন এসএফআই কর্মী সমর্থকরা। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সাথে ঠ্যালাঠেলি শুরু হয় এসএফআই কর্মী সমর্থকদের। পরে উপাচার্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পাঁচ প্রতিনিধির দল উপাচার্যের অফিসে দেখা করে। চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির স্বচ্ছ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে ও সেই কমিটির পক্ষ থেকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের লুট হয়ে যাওয়া টাকা পুনরুদ্ধার করতে হবে। তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা থাকতে হবে এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব করলে চলবে না। বিগত প্রায় ৪-৫ বছর ধরে অপ্রকাশিত থাকা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্নাল অডিট রিপোর্ট নির্দিষ্ট স্থানে পেশ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা গ্রহণ ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করতে হবে। এদিন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরি ও সভাপতি প্রবীর ভৌমিক জানিয়েছেন, গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। একইসঙ্গে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক নয়ছয়ের ঘটনায় তাঁরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। এদিন তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। যদিও পরে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআই সমর্থকেরা। অনির্বাণ জানিয়েছেন, এদিন উপাচার্য তাঁদের জানিয়েছেন, এই ঘটনায় যে আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তাতে আপত্তি আসায় সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে সম্পূর্ণ বিষয়টি পুলিশের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যে এজেন্সি দায়িত্বে ছিল তাঁদের বদলে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অনির্বাণ এদিন জানিয়েছেন, এদিন উপাচার্য তাঁদের জানিয়েছেন, ইন্টারন্যাল অডিট ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়নি।

Exit mobile version