E Purba Bardhaman

শেষ হল তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বর্ধমান পুরবোর্ডের মেয়াদ, বর্ধমান পুরসভায় নিযুক্ত হল প্রশাসক

Term of the Board of Burdwan Municipality was completed. The Burdwan Sadar (North) SDO took charge of the municipality

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ২০১৩ সালে বামেদের হাত থেকে বর্ধমান পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করে পুরবোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আনুষ্ঠানিকভাবে গত ২২ অক্টোবর তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হলেও শুক্রবার বিদায়ী পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত পুরসভার দায়িত্ব তুলে দিলেন প্রশাসক হিসাবে নিযুক্ত বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমা শাসক পুষ্পেন্দু সরকারের হাতে। একইসঙ্গে এদিন পুরসভার ৩৫জন কাউন্সিলারই রীতিমত বিষণ্ণ মনে পুরসভা থেকে বিদায় নিলেন। গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বর্ধমান ও গুসকরা পুরসভারও মেয়াদ শেষ। আসন্ন পুরনির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই দুটি পুরসভাতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পুরনির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত না হলেও ইতিমধ্যেই সংক্ষণের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। দুটি পুরসভাতেই হেভিওয়েট অনেক কাউন্সিলারই সংরক্ষণের জাঁতাকলে নিজেদের জায়গায় দাঁড়াতে পারছেন না। এদিকে, বামেদের হাত থেকে বর্ধমান পুরসভার দখল তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে আসার পর দফায় দফায় দলীয় কোন্দলের ঘটনা ঘটেছে। পুরসভার দুই কাউন্সিলার সমীর রায় এবং রত্না রায়কে দল থেকে বহিষ্কার করে কার্যত পুরসভা থেকে কোণঠাসাও করা হয়েছে। পুরপতি হিসাবে ডা. স্বরূপ দত্ত দায়িত্ব পালন করলেও অঘোষিতভাবে এক কাউন্সিলারের হাতেই পুরসভার দায়িত্ব পরিচালিত হচ্ছে বলে খোদ দলীয় কাউন্সিলাররা দফায় দফায় উর্ধতন নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন। এমনকি বারকয়েক তাঁরা কাউন্সিলারের দায়িত্ব ছেড়ে দেবার মত হুমকিও দিয়েছেন। কিন্তু সবকিছুকে দূরে সরিয়ে রেখে ৫ বছর পূর্ণ করলেও একেবারে শেষবেলায় এসে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে পুরসভায়। যার প্রভাব আসন্ন পুরনির্বাচনে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। সম্প্রতি বর্ধমান পুরসভায় কর্মী নিয়োগ নিয়ে রীতিমত স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় বেশ কিছু বিল্ডিং প্ল্যানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর অভিযোগকে ঘিরেই রীতিমত চর্চা শুরু হয়েছে বর্ধমান পুর এলাকায়। কেন দ্রুততার সঙ্গে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেওয়া হল তা নিয়ে চর্চার মাঝেই পুরবোর্ডে প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। যদিও এব্যাপারে বারবার মহকুমাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এদিন বিদায়বেলায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পুরপতি সহ পুর কর্মচারীরা। যদিও নতুন বোর্ড গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ মানুষের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন‍্য প্রশাসক হিসাবে তিনি কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক। ৫ বছর পর পুরসভার ভবন থেকে বিদায় নেওয়ার সময় সকলেরই মন খারাপ। দেওয়াল থেকে খুলে ফেলা হল পুরপতির নামফলক। দলের নির্দেশ মেনে আগামী দিনে যারা দায়িত্বভার নেবেন তাঁরা সঠিকভাবে উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে এদিন আশা প্রকাশ করেছেন বিদায়ী পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত।

Exit mobile version