মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষের এলাকা ঘুরে দেখলেন কৃষি উপদেষ্টা
admin
ভাতার (পূর্ব বর্ধমান) :-ভোট বড় বালাই। যেহেতু আর কদিন পরেই বর্ধমান জেলায় লোকসভা ভোট। তাই ভোটের সময় সরকারের বিরুদ্ধে কোনো চাষীই যাতে বিরুপ মনোভাব পোষণ না করেন সেই বিষয়ে রীতিমত সতর্ক খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। আর তাই সোমবারই বর্ধমানের দেওয়ানদিঘীতে বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা আসনের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতার সমর্থনে প্রচারে এসে কৃষিপ্রধান এলাকার সমস্যাকে মাথায় রেখেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করে যান চাষীদের পাশে আছে রাজ্য সরকার। মমতা বন্দোপাধ্যায় রীতিমত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে এই ইস্যুতেই তুলোধোনা করে প্রশ্নও ছোঁড়েন, কেন্দ্র চাষীদের জন্য কি করেছে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে যান, চাষীদের কৃষিবীমার সমস্ত টাকাই রাজ্য সরকার দিচ্ছে। তেমনি গত কয়েকদিনে যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কয়েকটি জেলায় চাষের ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে ইতমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে সার্ভে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে যান, সার্ভে রিপোর্ট পাবার পরই ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জেলার সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ভাতার ব্লকের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে গেলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। বিভিন্ন চাষের মাঠ পরিদর্শন ছাড়াও তিনি কথা বলেন স্থানীয় চাষীদের সঙ্গে। কথা বলেন স্থানীয় বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতির কর্তা, পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গেও। এদিন তাঁর সংগে ছিলেন জেলার কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য কৃষি আধিকারিকরাও। উল্লেখ্য, গত রবিবার কালবৈশাখীর ঝড় বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বোরোধানের জমি। কার্যত পাকা ধানে মই দেওয়ার মতই ঘটনা ঘটে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনায়। মাঠে মাঠে পাকা ধান। আর কদিন পরেই সেই ধান কাটা শুরুও করতে যাচ্ছিলেন চাষীরা। কিন্তু তারই মাঝে ঝড় বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টিতে গাছের পাকা ধান ঝড়ে গেছে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভাতার ব্লকের কাশিপুর, গ্রামডিহী, বনপাশ,বামুনারা, সাহেবগঞ্জ, নারায়ণপুর গ্রাম। এদিন সাহেবগঞ্জ এর এক চাষী প্রদীববাবুর কাছে অভিযোগ করেন, তিনি টোল ফ্রী নম্বরে ফোন করে ছিলেন। প্রথমে ফোন তোলেন নি বিমা কোম্পানি। কোন অভিযোগ নেয়নি। অনেক পরে ফোন তুলে কথা বলেন। সাহেবগঞ্জ ১ এর পঞ্চায়েত প্রধান চায়না অধিকারী জানান, এই এলাকায় প্রায় একশো শতাংশ জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বনপাশ এর প্রধান দীপ্তি মন্ডল জানান, নারায়ণপুর মৌজাতে ৬০ শতাংশেরও বেশী ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। প্রদীপবাবু এদিন জানিয়ে যান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি এলাকার পরিদর্শন করে গেলেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। রাজ্য সরকার চাষীদের পাশে আছে। তিনি এদিন জানান, নিয়মানুযায়ী এই ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে চাষীকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে হয়। সেটি যাতে যথাযথভাবে চাষীরা করতে পারেন সে ব্যাপারে এদিন কৃষি আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।