বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যে ফসলের ক্ষতি হয়েছে তার জন্য আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাসের ঘাটতিকেই দায়ী করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বললেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, চমকের রাজনীতি করে লাভ নেই। সারা বছর আমরা কৃষকদের পাশে থাকি। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করাটা একটু কঠিন। এবার ৯৫ শতাংশ চাষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা জানতে পারি যে এরকম একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসতে চলেছে। আগে থেকে কোনোরকম আভাষ ছিল না। আম্ফানের সময় সতর্ক করা হয়েছিল আগে থেকে। এবার হয়নি। অন্তত সাতদিন আগেও যদি বলা যেত তাহলেও এখন উন্নত মেকানিজম আছে, আমরা ফসল বাড়িতে তুলে নিতে কৃষককে পরামর্শ দিতে পারতাম। এক একর জমি থাকলে ১০,০০০ টাকা, কম জমি থাকলেও সে চার হাজার টাকা করে পাবে। কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে দু-লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। অবসর গ্রহণের পর এক হাজার টাকা করে পেনশন পাবে। আলুতে কিছুটা পরিমাণ প্রিমিয়াম দেওয়া ছাড়া শস্য বীমা বিনা পয়সায় করা হচ্ছে। গত বছর রবি আর খরিফে বীমা কোম্পানিকে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল কৃষকদের শস্যবীমা দেওয়ার জন্য। ক্লেম হয়েছিল ২৮০ কোটি টাকা। বৃষ্টিতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি ধানে। ক্ষতি হয়েছে আলুর বীজের। বাকি চারা গাছ কীভাবে রক্ষা করতে হবে তার জন্য আমরা পরামর্শদাতা পাঠিয়েছি। যে ধানগুলো কেটে মাঠে রাখা ছিল সেগুলো হয়ত কিছুটা নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। ফসলের ক্ষতির জন্য চাষি আত্মঘাতী হওয়ার বিষয়ে বলতে গিয়ে শোভনদেব বলেন, মমতা ব্যানার্জীর আমলে কোনও কৃষকের ফসল নষ্ট হওয়ার জন্য অভাবে আত্মঘাতী হওয়ার কথাই নয়। আলু চাষি মারা গেছে বলা হচ্ছে। কেন মারা যাবেন? সে তো ১০০ শতাংশ ক্লেম পেয়ে যাবে। জল না পাওয়ার জন্য চাষি চাষ করতে না পারলে তার জন্যও ২০০ কোটির মত টাকা দেওয়া হয়েছে। কি করে বাংলায় চাষি মারা যাবে? তিনি বলেন, দিল্লির পিএম কিষান নিয়ে বড় বড় কথা বলা হয়। পায় মাত্র ২৫ লাখ মানুষ। আর মমতার কৃষক বন্ধু এবার রবিশস্যেই পেয়েছেন ১ কোটি ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। আর পিএম কিষাণনিধি নিয়ে যে লাফাচ্ছে পিএম কিষান নিধি তো পায় মাত্র ২৯ লক্ষ মানুষ।