E Purba Bardhaman

গলসীর সাটিনন্দী গ্রামে খুন তৃণমূল সমর্থক, অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে

Allegation of killing a TMC supporter is against the BJP supporters. Minister Arup Biswas and Swapan Debnath came to the Burdwan. At Galsi (2)

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক সংঘর্ষে এবার পূর্ব বর্ধমানের গলসী ২ন্ং ব্লকের সাটিনন্দী গ্রামে খুন হলেন এক তৃণমূল সমর্থক। নিহত তৃণমূল সমর্থকের নাম জয়দেব রায় (৫০)। বাড়ি সাটিনন্দী গ্রামেই। অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে। নিহত জয়দেব রায়কে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও তিন তৃণমূল সমর্থক। মঙ্গলবার সকালে তৃণমূল সমর্থক জয়দেব রায়ের খুনের ঘটনার খবর পেয়েই এদিন দুপুরে হাসপাতালে ছুটে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ধমান জেলার প্রাক্তন পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসতৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সহ জেলার পদস্থ তৃণমূল নেতারা। বিজেপির হাতে তৃণমূল নেতার এই খুনের ঘটনায় এদিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও লোকসভার ফল প্রকাশিত হবার পর থেকেই চলছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ। সন্দেশখালিবসিরহাটের পর এবার পুর্ব বর্ধমানের গলসী থানার সাটিনন্দী গ্রামে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়ল। মৃত জয়দেব রায়ের স্ত্রী চম্পা রায় জানিয়েছেনপেশায় কলমিস্ত্রী জয়দেববাবু কাজ সেরে বাড়ি ফিরে আসেন। রাত্রি প্রায় সাড়ে সাতটার সময় তিনি চা খেয়ে সাইকেল নিয়ে স্থানীয় কলাবাগান মোড়ে যান আড্ডা দিতে। এরপর রাত্রি প্রায় সাড়ে নটা নাগাদ বিজেপি সমর্থকরা সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায় তাঁর ওপর। বিজেপি সমর্থকরা লাঠিরড,টাঙি নিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালায়। এই সময় তাকে বাঁচাতে আরো কয়েকজন তৃণমুল কর্মী এগিয়ে এলে তাদের ওপরও আক্রমণ চালানো হয়। এরপরই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় জয়দেব রায় সহ মোহন পুইলে,বলরাম মালিক,অনিল মালিককে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় জয়দেব রায়ের। বাকিরা চিকিত্সাধীন। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গ্রামবাসীদের একাংশের দাবীকলাবাগান মোড়ের একদিকে বিজেপির কয়েকজন কর্মী পিকনিক করছিল। সেখান থেকেই জয়দেববাবুকে লক্ষ্য কটুক্তি করেন। পরে তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কেও তাঁরা কটুক্তি করতে থাকেন। প্রত্যেকেই মদ্যপ ছিলেন। এই ঘটনায় জয়দেব রায় প্রতিবাদ করলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে আরও কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ছুটে আসলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মঙ্গলবার ভোরে জয়দেব রায়ের মৃত্যু হয়। এদিকেএই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে কয়েকজনকে পুলিশ আটকও করেছে। অন্যদিকেএই ঘটনায় এদিন বিকালে গলসী তৃণমুল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এলাকায় ধিক্কার ও শোক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথরাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ধমান জেলার প্রাক্তন পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস সহ জেলা নেতারা এদিন হাজির হন বর্ধমান হাসপাতালে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর সাটিনন্দী গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বপনবাবু এদিন তৃণমূল সমর্থক জয়দেব রায়ের খুন হবার ঘটনায় জানিয়েছেনলোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি গোটা রাজ্যে হিংসার খেলায় মেতেছে। কিন্তু তাঁরা গণতান্ত্রিকভাবেই এর মোকাবিলা করবেন। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এর প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। অপরদিকে,এই ঘটনায় বিজেপির কোনো যোগ নেই বলে সাফ দাবী করেছেন বিজেপির গলসী ২ ব্লকের সভাপতি কালিকারঞ্জন চ্যাটার্জ্জী। তিনি জানিয়েছেনএটা সম্পূর্ণভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তিনি দাবী করেছেনসোমবার সন্ধ্যাবেলায় গলসী এলাকার এক তৃণমূল নেতা ওই গ্রামে যান। বেশ কিছুদিন ধরেই ওই গ্রামে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন বিজেপিতে যোগ দেবার চেষ্টাও করছেন। তারই মাঝে ওই নেতা গ্রাম থেকে বার হতেই খুন হয়েছেন জয়দেব রায়। এর সঙ্গে বিজেপির কোনো যোগ নেই।

Exit mobile version