E Purba Bardhaman

বিজেপির সভা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্য জুড়ে শাসকদলের আক্রমণ, মিথ্যা মামলা, দলীয় কর্মীদের খুনের প্রতিবাদে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বুধবার বর্ধমান শহরেও বিজেপির অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচী নেওয়া হয়। আর এই সভা থেকেই এক পুলিশ অফিসারকে রীতিমত মারধোর করার অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনাও ছড়ায়। পুলিশ এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের কার্জনগেট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছিল বিজেপি পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি। পঞ্চায়েত ভোটে লাগামছাড়া সন্ত্রাস, বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ ও রাজ্য সরকারের সার্বিক ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। জেলার নানা এলাকা থেকে এদিন দলের কর্মী সমর্থকেরা সভায় যোগ দেন। কোনোরকম রাস্তা অবরোধের কর্মসূচী না থাকলেও প্রচুর সমর্থকের উপস্থিতিতে কার্জন গেটের সামনে রীতিমত অবরোধের চেহারা নেয়। দুপুর ১টা থেকেই সমস্ত গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর প্রায় ৩টে নাগাদ পুলিশের দুটি গাড়ি সভার জন্য আটকে পড়ে। এই সময় কর্তব্যরত পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ পুলিশের গাড়ি দুটিকে ভিড়ের মধ্যে থেকে বার করে দেবার চেষ্টা করেন। মঞ্চ থেকেও বিষয়টি নিয়ে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু উচ্ছৃঙ্খল বিজেপি কর্মী তাতে বাধা দিতে শুরু করে। পুলিশের গাড়িতেই তাঁরা ধাক্কা মারতে থাকেন। এই সময় ঘটনাস্থলে হাজির হন বর্ধমান সদর থানার মেজবাবু সমীর ঘোষ। পুলিশের গাড়ি দুটিকে ভিড় ঠেলে বার করে দিয়ে তিনি ফেরত আসার সময় এক বিজেপি কর্মী তাঁর পায়ে আঘাত করেন। এই সময় ওই যুবক ধরতে তাঁকে তাড়া করতেই রে রে করে এগিয়ে আসে বিজেপি কর্মীরা। পুলিশ অফিসার সমীর ঘোষকে চড় থাপ্পড় মারা হয়। তাঁর চশমা ছিটকে যায়। এই সময় পিছন থেকেও তাঁকে ধাক্কা মারা হয়। এই ঘটনায় রীতিমত উত্তেজনা ছড়ায়। ছুটে আসেন অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা। সভামঞ্চ থেকে নেমে আসেন বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী, যুবমোর্চার সভাপতি শ্যামল রায় প্রমুখরাও। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরে বিজেপি সমর্থকরা জেলাশাসকের দপ্তরে স্মারকলিপি দিতে গেলে সেখানেও পুলিশের সঙ্গে রীতিমত ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। মোট ১১ দফা দাবীতে এদিন জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এদিকে, পুলিশকে আক্রমণ করার ঘটনা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন, তাঁদের সভায় অন্য অনেক মানুষই জড়ো হয়েছিলেন। পুলিশকে তাঁরা আক্রমণ করে থাকতে পারেন। কিন্তু তাঁরা কেউই বিজেপি সমর্থক নয়। বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সহ সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তাঁদের কেউই পুলিশকে আক্রমণ করেনি। তবে পুলিশ গোটা রাজ্যে যা করছে তাতে তাদের সংযত হয়ে নিরপেক্ষভাবে করা উচিত। অন্যদিকে, জেলা পুলিশের এক অফিসার জানিয়েছেন, সরকারী কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারী কর্মীকে মারধোর করার ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাব একটি মামলা রুজু করেছে।

Exit mobile version