গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় চাকরি করে দেওয়ার নামে কয়েকজন বেকারের কাছ থেকে ৩২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তিন প্রতারক। কারোরই চাকরি হয়নি। টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে প্রতারকরা ২৫ লক্ষ টাকার একটি চেক দেয়। চেকটি বাউন্স করে। প্রতারিতরা ফের টাকা ফেরত চাইতে যান। কিন্তু, টাকা ফেরত না দিয়ে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রতারণার বিষয়ে বর্ধমান শহরের রাধানগরের বাসিন্দা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত, ভীতি প্রদর্শনের ধারায় মামলা রুজু করেছে বর্ধমান থানা। অভিযুক্তরা অবশ্য কেউ ধরা পড়েনি। বর্ধমান থানার এক অফিসার বলেন, কেস রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আরও কিছু নথিপত্র অভিযোগকারীর কাছে চাওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগে সুব্রত জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি খুঁজছিলেন। চাকরি না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। তার সঙ্গে বর্ধমান শহরের শ্যামলালের এক বাসিন্দার পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে কাটোয়া ও বাঁকুড়ার বেলুটের দু’জনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানায় তারা। চাকরির জন্য টাকা দিতে হবে বলে জানায় তারা। তাতে রাজি হয়ে যান তিনি। চাকরির জন্য তিনি টাকা দেন। পরে আরও ১০-১২ জনকে নিয়ে চাকরির জন্য ৩২ লক্ষ টাকা দেন। তিনি রেল, থার্মাল পাওয়ার, পিসি, ডেয়ারি, স্বাস্থ্য, খাদ্য সরবরাহ ও প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় তাদের। তাকে কৃষি দপ্তরের একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। পরে তিনি জানতে পারেন, নিয়োগপত্রটি জাল। তখন তিনি টাকা ফেরত চান। কিন্তু, নানা অছিলায় কালক্ষেপ করে প্রতারকরা। মাস তিনেক আগে তাঁদের বাঁকুড়ায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে গেলে একটি ঘরে আটকে রেখে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার পুলিস তাঁদের উদ্ধার করে। এরপর তারা বর্ধমান শহরের শ্যামলালে এক প্রতারকের বাড়িতে যান। সে তাদের ২৫ লক্ষ টাকার একটি চেক দেয়। চেকটি বাউন্স করে। এরপর বহুবার ফোনে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু, প্রতারকরা ফোন রিসিভ করেনি। পরে তিনি জেনেছেন, তার মতো আরও বহু ছেলে-মেয়ে প্রতারক চক্রটির খপ্পড়ে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। দোষীরা যাতে কঠোর সাজা পায় সেই দাবি জানিয়েছেন সুব্রত।