বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারিভাবে নির্বাচনের কাজ করেও ৩ বছর ধরে টাকা না পাওয়ায় এবার আত্মহত্যা ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা থাকছে না বলে হুঁশিয়ারি দিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ইলেকট্রিক বিভাগের ঠিকাদাররা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জেলার বিভিন্ন ঠিকাদার এজেন্সি অভিযোগ করেছেন, গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন মহকুমায় সিআরপিএফ এবং আরপিএফের ক্যাম্পের জন্য তাঁরা ইলেকট্রিকের কাজ করেন। সাকুল্যে গোটা জেলায় এই বাবদ তাঁদের পাওনা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। গোটা রাজ্যে এই বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গৌতম দাস জানিয়েছেন, অত্যন্ত ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছেন এই ঠিকাদাররা। সরকারের কাছে এই বিশাল পরিমাণ টাকা বকেয়া থাকায় তাঁরা অন্য কোনো টেন্ডারে অংশই নিতে পারছেন না। ফলে আর্থিকভাবে তাঁরা তীব্র সংকটের মুখে পড়েছেন। এদিন উদয় কুণ্ডু জানিয়েছেন, তাঁরা এই বকেয়ার দাবিতে বারবার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় এদিন ঠিকাদাররা স্মারকলিপি দিয়েছেন এই বকেয়া মেটানোর দাবিতে। উদয়বাবু জানিয়েছেন, এদিন বর্ধমানের পূর্ত ভবনেও তাঁরা আগাম জানিয়ে পিডব্লিউডি-র ইলেক্ট্রিক্যাল ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অজানা কারণে তিনি অফিসে আসেননি। তিনি জানিয়েছেন, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু এখনও তাঁরা বকেয়া টাকা পেলেন না। গত ৩ বছর ধরে তাঁরা দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেই চলেছেন। উদয়বাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে এই বকেয়া টাকার জেরে একাধিক ঠিকাদারকে নানাভাবে হেনস্তা হতে হচ্ছে পাওনাদারদের কাছে। ফলে ঘরে বাইরে তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। বাধ্য হয়ে তাঁদের আত্মহননের পথ বেছে নিতে হবে। অথচ তাঁরা সরকারিভাবে কাজ করেছেন। সরকারি নির্দেশে তাঁরা কাজ করেছেন। এখন দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে তাঁরা উপরতলায় জানিয়েছেন। কিন্তু এভাবে কতদিন চলা সম্ভব? উদয়বাবু জানিয়েছেন, যদি দ্রুত তাঁদের এই সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে তাঁরা একদিকে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন অন্যদিকে, তাঁরা গোটা রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন। সেক্ষেত্রে সামনেই ফের নির্বাচন, প্রশাসন সমস্যায় পড়লে তাঁরা দায়ী থাকবেন না। উল্লেখ্য, অভিযোগ শুধু গত বিধানসভা নির্বাচনের বকেয়াই নয়, পুরসভা নির্বাচনের সময় কাজ করেও তাঁদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এমনকি বাবুল সুপ্রিয়র কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও তাঁদের বকেয়া রয়েছে কয়েক লক্ষাধিক টাকা।