জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান) :- চার বছরের শিশু কন্যাকে ঘুম পাড়িয়ে স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দম্পতিকে বর্ধমান হাসপাতালে আনা হলে সোমবার ভোরে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। স্ত্রী হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুর থানার উত্তর মোহনপুর এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, মৃতের নাম ভবতোষ মন্ডল (২৬)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন স্ত্রী ঝুমা মন্ডল। পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানা গিয়েছে, ভবতোষ মন্ডল গ্রামে ঘুরে ঘুরে আখের রস বিক্রি করতেন। সম্প্রতি তিনি দুটি মোটরবাইক কেনেন। নিজের জন্য একটি বাইক ও স্ত্রীর জন্য একটি স্কুটি কেনেন। এই দুটি বাইক কেনার জন্য তিনি বাজার থেকে লোন করেন। বন্ধন-সহ আরও একটি সংস্থা থেকে ঋণ করেন তিনি। দুটি লোনের মাসিক কিস্তি ছিল ১২ এবং ৩ হাজার মিলিয়ে মোট ১৫ হাজার টাকা। প্রতি মাসের ১ তারিখে এই লোনের টাকা শোধ করতে হত। কিন্তু, স্বল্প রোজগারে এই লোন শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন ভবতোষ। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তিও হচ্ছিল। সেই অশান্তির কারণেই শনিবার রাতে তাঁরা এক সঙ্গে কীটনাশক খান বলে মনে করছে পরিবার ও স্থানীয়রা। বর্ধমান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বেডে শুয়ে গৃহবধূ ঝুমা মন্ডল জানিয়েছেন, লোনের টাকা নিয়ে প্রতিদিন অশান্তি হচ্ছিল। সেই কারণে আমরা একসঙ্গেই কীটনাশক খাই। বাড়িতে থাকা চার বছরের মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে একসঙ্গে কীটনাশক খান বলে তিনি স্বীকার করেছেন। মৃতের বন্ধু সুজয় বাড়ুই বলেন, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত একসাথে আড্ডা দিয়েছি। তখনও কিছুই আঁচ পাইনি। তবে লোনের কিস্তি শোধ নিয়ে এর আগেও ওদের মধ্যে অশান্তি হয়েছে। তখন আমরা মিটমাটও করে দিয়েছিলাম। একটা গাড়ির টাকা শোধ হয়েছিল বলেও শুনেছিলাম। কিন্তু এইরকম হতে পারে সেটা ভাবতেও পারিনি।