বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান শহরের বাবুরবাগ এলাকার একটি পুকুর থেকে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকের পচা-গলা দেহ উদ্ধার হওয়ার মামলায় ফের তদন্তের নিের্দশ দিল আদালত। তাঁকে খুনের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই বলে আদালতে রিপোর্ট পেশ করে পুলিস। তার বিরোধিতা করে আদালতে আবেদন করেন মৃতের পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার সেই আবেদনের শুনানি হয়। আবেদনকারীর আইনজীবী অরূপরতন সরকার আদালতে পুলিসি তদন্তের বেশকিছু খামতির কথা তুলে ধরেন। আদালতে তিনি বলেন, পুলিস একটি সুসাইডাল নোট উদ্ধার করেছে। সেটি আদৌ মৃতের লেখা কিনা তা মিলিয়ে দেখেনি পুলিস। তাছাড়া ফরেন্সিক রিপোর্ট সংগ্রহ না করেই তদন্তকারী অফিসার খুনের অভিযোগের সারবত্তা নেই বলে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছেন। সওয়াল শুনে সিজেএম চন্দা হাসমত ঘটনার ফের তদন্তের নিের্দশ দিয়েছেন। আগের তদন্তকারী অফিসারকে বাদ দিয়ে কোনও যোগ্য সাব-ইন্সপেক্টরকে দিয়ে অভিযোগের তদন্ত করানোর জন্য আইসিকে নিের্দশ দিয়েছেন সিজেএম। পুলিসি তদন্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সিজেএম। নিের্দশ দিতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন, মামলার নথিতে একটি নোট উদ্ধার হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, সেটি মৃতের কিনা তা পরীক্ষিত নয়। মৃতের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করে সেটির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া নোট মিলিয়ে দেখেন নি তদন্তকারী অফিসার। পুলিস যে হাতের লেখা না মেলার কথা বলেছে তাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি দু’টি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। স্কুলের রেকের্ড হাতের লেখা থাকার কথা। হাজিরা খাতা এবং চাকরির আবেদন স্কুলে থাকা উচিত। তাই, তদন্তকারী অফিসারের দাবি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। এছাড়াও ফরেন্সিক রিপোর্ট সংগ্রহ না করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট বাবুরবাগ এলাকার একটি পুকুর থেকে সৌমেন মিশ্র (৩৫)-র পচা-গলা দেহ উদ্ধার হয়। বর্ধমান শহরের গোদা এলাকায় তাঁর আদি বাড়ি। শহরের বাদশাহী রোডে স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। তাঁর স্ত্রী পুলিসকর্মী। দেহ উদ্ধার হওয়ার ২ দিন আগে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। তারপর থেকে তাঁর হদিশ মিলছিল না। মৃতের পরিবারের তরফে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে সিজেএম আদালতে মামলা করা হয়। সিজেএম খুনের মামলা রুজু করে তদন্তের নিের্দশ দেন। তদন্ত সম্পূর্ণ করে অভিযোগের সারবত্তা না মেলার কথা জানিয়ে পরের বছর ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার দীপ্তেশ চট্টোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে মতামত জানার জন্য মামলাকারীকে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পেয়ে পুলিসি তদন্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আবেদন জানান মামলাকারী।