বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- দাবিমতো ৩০ লক্ষ টাকা না পেয়ে এক যুবককে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মেমারি থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম আব্বাস শেখ, আলিম শেখ ও সুখেন সূত্রধর। নদিয়ার কালিগঞ্জ থানার মীরাছোট কুলবেড়িয়ায় আব্বাসের বাড়ি। কালিগঞ্জ থানারই জানকিনগরে আলিমের বাড়ি। মেমারি থানার সাতগেছিয়ায় সুখেনের বাড়ি। আব্বাস ও আলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনায় সুখেনের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিশ। শনিবার সকালে দু’জনকে নিয়ে বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগেই শুক্রবার রাতে কালিগঞ্জ থানা এলাকা থেকে অপহরণে ব্যবহৃত স্করপিও গাড়িটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা ধৃতরা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। এদিনই ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। অপহরণের মোটিভের বিষয়ে বিশদে জানতে এবং ঘটনায় বাকি জড়িতদের হদিশ পেতে ধৃতদের ৫ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতদের তিনদিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন নম্বর থেকে মেমারি থানার সাতগেছিয়ার পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত ঘোষ ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে আব্বাস হুমকি দিয়ে ফোন করছিল। জয়ন্ত ও তাঁর পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। দাবিমতো টাকা না দিলে জয়ন্তকে খুন করা হবে বলে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জয়ন্ত সাতগেছিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে মনসাতলার কাছে একটি সাদা স্করপিও গাড়ি তাঁর সামনে দাঁড়ায়। তা থেকে নেমে কয়েকজন জোর করে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। ঘটনার দিনই জয়ন্তর বাবা সত্যনারায়ণ ঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি ছেলেকে টাকা দাবি করে ফোনের কথা জানান। পাশাপাশি টাকা না পেয়েই তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি অপহরণকারীরা ছেলেকে খুন করে লাশ গুম করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। অভিযোগ পেয়েই কেস রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। মোবাইল ও অন্যান্য বিভিন্ন সূত্র ধরে মেমারি থানার পুলিশ জানতে পারে, অপহৃত এবং অপহরণকারীরা মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানা এলাকায় রয়েছে। বিষয়টি জানার পর শুক্রবার পুলিশ রেজিনগর থানা এলাকায় হানা দেয়। সেখানকার লোকনাথপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আব্বাস ও আলিমকে ধরে পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই উদ্ধার করা হয় জয়ন্তকে।