E Purba Bardhaman

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত গানের শিক্ষকের আগাম জামিন খারিজ করল আদালত

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়া এবং শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত গানের শিক্ষক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল বর্ধমানের বিশেষ পকসো আদালত। গ্রেপ্তার এড়াতে অভিযুক্ত আগাম জামিনের আবেদন করে। বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের শুনানি হয়। ধৃতের হয়ে আইনজীবী সৈয়দ মহম্মদ ইয়াসিন, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, উদয় কোনার ও মুন্সি আসাদুজ্জামান জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। অভিযুক্তের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, ঘটনার অনেকদিন পর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এতদিন পর এফআইআর করার পিছনে উদ্দেশ্য রয়েছে। গানের শিক্ষককে জেলে ঢোকানোই একমাত্র লক্ষ্য অভিযোগকারীদের। তাছাড়া, ম্যাসেঞ্জারে পাঠানো মেসেজ গানের শিক্ষকই পাঠিয়েছেন তা নিশ্চিত নয়। অন্য কেউ মেসেজ পাঠাতে পারে। তাছাড়া অভিযুক্ত স্কুলের গানের শিক্ষক। তার গানের স্কুলও রয়েছে। যে কোনও শর্তে তার জামিন মঞ্জুর করা হোক। সরকারি আইনজীবী গৌতম মুখোপাধ্যায় ও অভিযোগকারীর আইনজীবী কমল দত্ত বলেন, শিক্ষককে সমাজে আলাদা মর্যাদা দেওয়া হয়। গানের শিক্ষকের এ ধরণের কাজ শিক্ষক সমাজ সম্পর্কে মানুষের ধারণা খারাপ করবে। লজ্জায় এতদিন কেউ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেনি। সমাজের কাছে বার্তা দিতে এ ধরণের শিক্ষকদের ঠাই জেলে হওয়া উচিত। শুনানি চলাকালীন তদন্তকারী অফিসারের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া মোবাইল চেয়ে নেন বিচারক। মোবাইলে পাঠানো গানের শিক্ষকের মেসেজ খুঁটিয়ে পড়েন তিনি। মামলার সমস্ত নথিপত্র খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করার পর অভিযুক্ত গানের শিক্ষকের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন পকসো আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম দত্ত। জামিন খারিজ করতে গিয়ে বিচারক গানের শিক্ষকের পাঠানো বিভিন্ন মেসেজে কি উল্লেখ করা আছে তা উল্লেখ করেছেন। একজন শিক্ষক ছাত্রীকে কিভাবে এ ধরণের মেসেজ পাঠায় তা নিয়ে বিস্মিত বিচারক। এ ধরণের শিক্ষকের ঠাই জেলে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক। এ ধরণের ঘটনায় আলাদা আইন করা উচিত যাতে অভিযুক্তরা যতদিন না সমাজে মেশার যোগ্য হয়ে উঠছে ততদিন তাদের জেলে রাখার বিধান থাকে। এ ধরণের আচরণ জন্তুর চেয়েও খারাপ। তাই তাদের জেলের ঘানি টানা উচিত।
কল্যাণের বিরুদ্ধে স্কুলের ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়া এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে হরিসভা হিন্দু হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মা অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে নানা অশালীন চ্যাট পাঠাত কল্যাণ। তাঁর মেয়ে কল্যাণের বাড়িতে গান শিখতে গেলে সে কুপ্রস্তাব দেয়। এমনকি মেয়ের শ্লীলতাহানিও করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ও মেয়ের আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় কল্যাণ।

Exit mobile version