বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রীতিমত বিস্ময় আর তার সঙ্গে একরাশ সংশয় নিয়ে ‘উদয়ন’ স্টলে এগিয়ে যাচ্ছেন খাদ্য রসিকরা। আর ফিরছেন একরাশ খুশী আর সঙ্গে কৌতূহল নিয়ে। ‘বর্ধমান ফুডিস ক্লাব’-এর উদ্যোগে শনিবার থেকে বর্ধমানের শাঁকারিপুকুর উৎসব ময়দানে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বর্ষের খাদ্য মেলা ‘খাদ্যান্বেষণ ২০২৩”, চলবে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেই মেলায় এবার রীতিমত হটকেক বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা বন্দিদের হাতে তৈরি বিরিয়ানী আর চিকেন চাপ। পরিবেশনও করছেন তাঁরাই। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই । বিরিয়ানী ১২০ টাকা ও চিকেন চাপ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। চিলি চিকেন ৩ পিসের দাম ৫০ টাকা। বস্তুত, এই মেলায় জেলবন্দিদের খাবার নিয়ে যেমন সাধারণ মানুষের উৎসাহ তুঙ্গে, তেমনি বন্দিদের দেখার কৌতূহলও কার্যত তুঙ্গে। সাময়িক মুক্তি পাওয়া এই জেল বন্দিদের সবসময় নজরে রাখছেন সাদা পোশাকের পুলিশ। রয়েছে গোপনে কড়া নিরাপত্তাও। সাজা শেষে যাতে এই বন্দি জীবন কাটিয়ে জীবনের তথা সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারেন তাঁরা সেজন্যই বিগত কয়েকবছর ধরে রাজ্য কারা দপ্তর এই ধরণের আয়োজন করে। কখনও নাটক, কখনও গান বাজনা, আবার কখনও এই ধরণের রান্নাবান্না। শনিবারই সন্ধ্যায় দমদম রেঞ্জের ডিআইজি নবীনচন্দ্র সাহা বর্ধমানের এই খাদ্য মেলার উদয়ন স্টলে আসেন। তিনি জানিয়ে যান, শুধু খাবারের ব্যাপারই নয় জীবনে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন রকম উদ্যোগ গ্ৰহন করা হয়েছে তার মধ্যে এটা একটা। এদেরকে মানুষের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া, সমাজে যাতে মূল শ্রোতে ফিরতে পারে তারই একটা প্রচেষ্টা। সবার সঙ্গে এরা মিশবে, কথা বলবে। আর হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বে না এটাই মূল লক্ষ্য। বর্ধমান রেঞ্জের ডিআইজি শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিভিন্ন সেন্ট্রাল, ডিস্ট্রিক্স জেলে যেমন ক্যাণ্টিন আছে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেও ‘উদয়ন’ নামে একটা ক্যাণ্টিন চলছে। এর লভ্যাংশের একটা বন্দীদের ওয়েলফেয়ার ফান্ডে জমা রাখা হয়। বাকিটা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। গত বছরও এই মেলায় স্টল দেওয়া হয়েছিল। বিরিয়ানি, চিকেন চাপ, চিকেন কষা, চিল্লি চিকেন, মিষ্টি-সহ বিভিন্ন আইটেম তৈরী করছেন বন্দিরা। গত বছর বিক্রি ভালোই হয়েছে। প্রতিদিন বিকাল ৫ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত ৪ জন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক এই স্টল সামলাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই মেলায় একদিন ৩জন মহিলা বন্দিদের সঙ্গে ৬ জন পুরুষ বন্দি নৃত্য নাট্যও করবেন।