কেতুগ্রাম (পূর্ব বর্ধমান) :- কেতুগ্রামে বন্যার্তদের পাশে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। শনিবার জেলাশাসক আয়েষা রানি এ.,অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অমিয় কুমার দাস, কাটোয়ার মহকুমাশাসক অনীশা জৈন, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। কেতুগ্রাম ১ ব্লকের আনখোনা পঞ্চায়েতের মৌরী, মাজিনা এলাকা ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বিল্বেশ্বর পঞ্চায়েতের অজয় লাগোয়া চরকি গ্রামে যান তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি দেখেন। দুটি ব্লকের বন্যা দুর্গত প্রায় ৯০ জনকে ত্রাণ তুলে দেন জেলাশাসক। প্রবল বৃষ্টির জেরে বীরভূম থেকে আসা জলে কেতুগ্রাম ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা ও অজয়ের জল উপচে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বিশাল এলাকা প্লাবিত। হাজার হাজার বিঘার ফসল নষ্ট হয়েছে। এর আগে এখানকার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। দুর্গতের জন্য ত্রিপল দিয়ে যান। দুটি ব্লকের তরফেই বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত মৌজার সংখ্যা ২১ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১২ হাজারের কাছাকাছি। এই ব্লকের আনখোনা অঞ্চলের সুবিপুর থেকে (ভায়া চাকটা) মাঝিনা পর্যন্ত ৪ কিমি রাস্তা, আনখোনা থেকে চেঁচুরি প্রায় ২ কিমি রাস্তা, পাণ্ডুগ্রাম হাসপাতাল থেকে ৩ কিমি রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ন’পাড়া থেকে চাকটা ও নারেঙ্গা এলাকায় অজয়ের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ৫৬ টি মৌজার সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর কৃষিজমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এই ব্লকে ভাগীরথীর পার বরাবর এলাকার শাঁখাই কায়স্থপাড়া, নৈহাটি প্রাইমারি স্কুল, দত্তবাটি প্রাইমারি স্কুল-সহ বহু জায়গায় রোজই মাটি ধসে পরছে। উদ্ধারণপুর থেকে শাঁখাই ৪ কিমি, শিবলুন হল্ট থেকে (ভায়া গঙ্গাটিকুরি ব্লক অফিস) অম্বলগ্রাম পর্যন্ত ৫ কিমি, উদ্ধারণপুর থেকে মৌগ্রাম ৭ কিমি, বেলুটিয়া থেকে (ভায়া বহরান) কেঁওগুড়ি ৯ কিমি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রসুই ও তেওড়ায় অজয়ের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলাশাসক আয়েষা রাণী এ. জানান, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে আছে। ফসলের ক্ষতিপূরণ যাতে মেলে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও শারদীয়া উৎসবের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থার পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন জামা কাপড় দেওয়া হয়েছে। একই সাথে শিশুদের কথা মাথায় রেখে কিছু পুষ্টিকর খাদ্য সমগ্রীও প্রদান করা হয়েছে।