E Purba Bardhaman

সাহস জুগিয়েছে আর জি কর, এক বছর আগে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন চান পরিবার

The family wants to unravel the mystery of her daughter's death while studying medicine a year ago

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সাহস জুগিয়েছে আর জি কর কাণ্ড। তাই একবছর আগে তাঁর মেয়ের ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন বাবা-মা। যদিও এরপরেও চূড়ান্ত ভয় তাড়া করে ফিরছে তাঁদের। যদি তাঁদের এই মুখ খোলার কারণে শাসকের রোষে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। তাই চাইলেন না সংবাদ মাধ্যমের কাছে সরাসরি ফোকাস হতে। বর্ধমান শহর লাগোয়া একটি পাড়ার বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী মৃত ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ১২ জুনের ঘটনা। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে ডাক্তারি পড়তে যায় কোচবিহার মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের মেয়ের আত্মহত্যার খবর পান ২০২৩ সালের জুন মাসের ১২ তারিখ। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ছুটে যান কোচবিহারে। কিন্তু এক বছর পেড়িয়ে যাবার পরও মেয়ের মৃত্যু নিয়ে আজও ধোঁয়াশা তাঁদের কাছে। কী ঘটেছিল? এই প্রশ্নে মৃত ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, গভীর অবসাদের কারণে তাঁদের মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তাঁদের অভিযোগ, কলেজের পরিবেশ একদমই ভালো ছিল না। পরীক্ষার সময় অনেকেই টুকলি করে পরীক্ষা দিতো। এমনকি কলেজের শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়ার বদলে টেকনিক্যাল কর্মীরা পরীক্ষার হলে গার্ড দিতেন। যা দেখে আমার মেয়ে ডিপ্রেশনে চলে যায়। এসব কথা আমার মেয়ে বারে বারেই বলতো। অথচ এই মেয়েই ভর্তি হওয়ার সময় ডাক্তার হওয়ার আশা নিয়ে কলেজে ভর্তি হয়। তিনি জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগের দিন কলেজের ফিজও অনলাইনে পাঠাতে বলে। বান্ধবীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফিজ জমা দেওয়ার পর, পরে বান্ধবীকে সেই টাকা দিয়ে দেয়। এদিন তিনি প্রশ্ন তুলেছেন কলেজের ভূমিকা নিয়েও। তিনি জানিয়েছেন, ওইদিন কলেজ সকাল ৬.৩০ টার সময় মৃত্যুর খবর জানতে পারলেও তাঁদের জানানো হয় দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ। এমনকি তাঁরা কলেজে যাবার পর যে ঘরে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে বলা হলেও সেই ঘরে যেতে দেওয়া হয় নি। বলা হয় ঘর সীল করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও তাঁদের সাথে কলেজের তিন বান্ধবীকে কথা বলতে দেওয়া হয় নি। এমনকি তাঁরা কোনোরকম যোগাযোগ করে সমবেদনা পর্যন্ত জানায়নি। স্বভাবতই তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মৃতার পরিবার। বর্ধমানের মেধাবী পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে আজও ধোঁয়াশা তাঁর পরিবারের মধ্যে। আর জি কর কাণ্ডের পর তাঁরাও চাইছেন তাঁরও মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটিত হোক। জানিয়েছেন, তাঁদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাই কোর্ট কাছারি করতে পারেননি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মৃতার বাবা জানান, ময়নাতদন্তের পর দাহ করতে গিয়েও সিনিয়রদের ঘেরাটোপে ছিলেন। সিনিয়র ছাত্ররা তাঁদের ঘিরে রেখেছিল। ৩ টি মেয়ে ও ১ টি ছেলের বিরুদ্ধে তুলেছেন অভিযোগের আঙুল। কলেজের হোস্টেলে ইন্ট্রো দেবার নাম চলতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অত্যাচার, এমন অভিযোগ করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, সেই সময় পাশে পাননি কাউকেই। সাংবাদিকদের থেকে পরিবারকে দূরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেছে ওই কলেজের সিনিয়র ছাত্ররা।

Exit mobile version