Site icon E Purba Bardhaman

ব্যাংক অফিসার পরিচয় দিয়ে এটিএমের তথ্য জেনে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রের হদিশ পেল পুলিস

প্রতীকি চিত্র – pixabay.com

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ব্যাংক অফিসার পরিচয় দিয়ে এটিএমের তথ্য জেনে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এক বড়সড় চক্রের হদিশ পেয়েছে ভাতার থানার পুলিস। চক্রের মূল পাণ্ডা করণ কুমার মুমুকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে তার আদি বাড়ি। ঝাড়খণ্ডেরই জামতারার সাহারপুরায় শ্বশুরবাড়িতে বর্তমানে থাকে সে। সেখান থেকেই সোমবার রাতে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। টাকা হাতানোর কথা ধৃত কবুল করেছে বলে জানিয়েছে পুলিস। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন চক্রে জড়িত বলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে পুলিস। মঙ্গলবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে ১৪ দিন পুলিসি হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার চিরঞ্জিৎ ঘোষ। ধৃতকে ৮ দিন পুলিসি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম।
পুলিস জানিয়েছে, গত ২০ আগস্ট বেলা ১০টা নাগাদ ভাতার থানার কুবাজপুরের বাসিন্দা আশুতোষ মুখোপাধ্যায় একটি ফোন পান। ব্যাংকের অফিসার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ফোন করে তার কাছ থেকে এটিএমের তথ্য জানতে চায়। সরল বিশ্বাসে তিনি পিন নম্বর সহ এটিএমের সমস্ত তথ্য দিয়ে দেন। এরপরই তার অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়। বিষয়টি তিনি ব্যাংকে জানান। ব্যাংকের পরামর্শে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে ভাতার থানার পুলিস জেলার সাইবার সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সাইবার সেল বেশকিছু তথ্য দেয় তদন্তকারী অফিসারকে। তার ভিত্তিতে টাকা হাতানোয় ঝাড়খণ্ডের গ্যাংয়ের জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিস। এরই মধ্যে কলকাতার লালবাজার গোয়েন্দা দপ্তরের ব্যাংক জালিয়াতি শাখা শেক্সপীয়র সরণি থানার একটি মামলায় পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের মুরিডির সুশান্ত সরেনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে হেপাজতে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের মিহিজামের আলম আনসারির জড়িত থাকার কথা জানতে পারেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। আলমকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাকেও হেপাজতে নেয় ব্যাংক জালিয়াতি শাখা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ভাতারের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা। লালবাজারের গোয়েন্দারা বিষয়টি ভাতার থানায় জানান। এরপরই পুলিসি হেপাজতে থাকা সুশান্ত ও আলমকে লালবাজারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ভাতার থানার তদন্তকারী অফিসার। জিজ্ঞাসাবাদে টাকা হাতানোয় জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হন তিনি। এরপরই বর্ধমান আদালতে পেশ করে সুশান্ত ও আলমকে হেপাজতে নেয় ভাতার থানা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে করণের কথা জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসার। এরপরই সাইবার সেলের ওসিকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডে হানা দেয় ভাতার থানার পুলিস।
পুলিস জেনেছে, চক্রের মূল পাণ্ডা করণ। সে আরও এ ধরণের ঘটনায় জড়িত। রীতিমতো লোক নিয়োগ করে সে এ ধরণের প্রতারণা চালায়। প্রতারণার পাঠ দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিস। এভাবে লোক ঠকিয়ে প্রচুর টাকার সম্পত্তি করেছে করণ। স্ত্রীর নামে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছে সে। উল্লেখ্য, জেলায় এ ধরণের বহু ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটনায় কিনারা করতে পারেনি পুলিস। করণ ধরা পড়ায় ব্রেক থ্রু মিলতে পারে বলে আশা পুলিসের।

Exit mobile version