গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বুদবুদ থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতে হবে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালত গঠন হওয়ার পর বুদবুদ থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি সেখানে হওয়ার কথা। কিন্তু, বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, সোমবার জেলা জজ কেশাং ডোমা ভুটিয়া বুদবুদ থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি বর্ধমান আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন। যদিও কাঁকসা-সহ পশ্চিম বর্ধমানের অন্যান্য থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি সেখানকার জেলা আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলা জজ। এদিন কয়েকটি আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি আসানসোলে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা জজ। বুদবুদ থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি বর্ধমান আদালতে হওয়ার ঘোষণায় খুশি আইনজীবী মহল। বুদবুদ ও কাঁকসা থানাকে বর্ধমান জেলা আদালতের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বৃহস্পতিবার চিঠি দেওয়া হয়। তারপরই জেলা জজের এদিনের নির্দেশকে তাদের জয় বলে মনে করছে বার অ্যাসোসিয়েশন। জেলা জজের এদিনের নির্দেশকে বুদবুদ থানার বর্ধমান জেলা আদালতের আওতায় আসার প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বার অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীরা। বারের আশা আরও বেড়েছে রবিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ঘোষণায়। আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে প্রধান বিচারপতি জানান, দুর্গাপুর আদালতের আওতায় পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর, অণ্ডাল, ফরিদপুর, দুর্গাপুর এনটিএস, কোকওভেন ও কাঁকসা থানা থাকবে। প্রধান বিচারপতির এই ঘোষণাকে বুদবুদ থানার বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে আসার প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে মনে করছে বার অ্যাসোসিয়েশন। জেলা ভাগ হওয়ার আগে কাঁকসা ও বুদবুদ থানার মামলার বিচার হত বর্ধমান আদালতে। পরবর্তীকালে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট হওয়ার পর কাঁকসা থানা দুর্গাপুর আদালতের অধীনে যায়। জেলা ভাগ হওয়ার পর বুদবুদ থানা আসানসোল কমিশনারেটের আওতায় চলে যায়। যদিও বুদবুদ থানা গলসি-১ ব্লকের অধীনে। প্রশাসনিকভাবে গলসি-১ ব্লক পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে পড়ে। প্রশাসনিকভাবে পূর্ব বর্ধমানের অন্তর্ভুক্ত হলেও কিভাবে বুদবুদ থানা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে পড়ে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বর্ধমান বার। বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক পার্থ হাটি বলেন, প্রশাসনিকভাবে বুদবুদ থানা পূর্ব বর্ধমানের আওতায়। প্রশাসনিকভাবে জেলা ভাগ হয়েছে। তাহলে কিভাবে বুদবুদ থানা পশ্চিম বর্ধমান আদালতের আওতায় পড়তে পারে? বুদবুদ ও কাঁকসা থানাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দিয়েছি। দাবি না মানা হলে আন্দোলনে নামবেন আইনজীবীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, এদিন জেলা জজ আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। বুদবুদ থানার মামলার আগাম জামিনের আবেদন পূর্ব বর্ধমান আদালতে হবে বলে জেলা জজ জানিয়েছেন। এরপর সব মামলা এখানে আনার জন্য দাবি জানাব। এটা আমাদের নৈতিক জয়। তাছাড়া, প্রধান বিচারপতি পরিস্কারভাবে দুর্গাপুর আদালতের অধীনে ৭টি থানার নাম জানিয়ে দিয়েছেন। বুদবুদ থানা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতের মধ্যে পড়ছে না বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন। এরপর কাঁকসা থানাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের আওতায় আনার জন্য আন্দোলন হবে। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করব।