E Purba Bardhaman

পূর্ব বর্ধমানে একাধিক ব্যক্তির আধার কার্ড নিষ্ক্রিয়, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানালেন মতুয়া মহাসংঘের নেতৃত্ব

The leadership of Matua Mahasangha expressed anger over the letter of deactivation of Aadhaar cards of several people in Jamalpur

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- “অনেক আশা নিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা শান্তনু ঠাকুরকে ভোট দিয়েছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছেন। কিন্তু মতুয়াদের জন্য তিনি কিছু করেননি। মতুয়াদের তাঁর কাছে অনেক প্রত্যাশা ছিল কিন্তু তিনি প্রতারণা করেছেন মতুয়াদের। মতুয়াদের ধোঁকা দিয়েছেন।” রবিবার বর্ধমানে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির ডাকে সাংবাদিক বৈঠকে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন নেতৃত্বরা। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান জেলা-সহ নদীয়া এবং আরও কয়েকটি জেলায় সিংহভাগ ক্ষেত্রে পূর্ববঙ্গ থেকে আগত মানুষদের আধার কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাদের কাছে চিঠিও এসে পৌঁছেছে। ইতোমধ্যেই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক জলঘোলাও শুরু হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতেই এদিন মতুয়া সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। এদিন এই সংগঠনের জেলা সভাপতি সুপ্রভাত গাইন জানিয়েছেন, তাঁরা লক্ষ্য করেছেন এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই প্রায় ৩০০ ব্যক্তির আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তাঁদের প্রায় সকলেই মতুয়া ভক্ত। তিনি এদিন জানিয়েছেন, মাঝে মাঝেই বিজেপি সরকারের মন্ত্রীরা আসছেন আর এনআরসি করার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় এভাবে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার বিষয়টি তাঁদের রীতিমতো শঙ্কিত করেছে। সুপ্রভাতবাবু জানিয়েছেন, এই আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করায় চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছেন তাঁরা। বন্ধ হয়ে গেছে রেশন পাওয়া। তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু চলতি অবস্থায় সবকিছুই আধার কেন্দ্রিক তাই সবক্ষেত্রেই এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এরপরেই সুপ্রভাতবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়ারা যাঁকে ভগবান বলে মনে করতেন সেই শান্তনু ঠাকুর নিশ্চয়ই কিছু ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তিনি কিছু তো করেননি উল্টে এনআরসির পক্ষেই সওয়াল করছেন। কার্যত তিনি ভাঁওতাবাজি করছেন মতুয়াদের সঙ্গে। অন্যদিকে, মতুয়া মহাসংঘের বর্তমান সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর ইতোমধ্যেই এই আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার বিষয়টি নিয়ে লড়াই শুরু করেছেন বলে এদিন জানিয়ে সুপ্রভাতবাবু জানিয়েছেন এইজন্যই তাঁরা মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে আছেন। উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩০০-র কাছাকাছি মানুষের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে এদিন দাবি করেছেন সুপ্রভাতবাবু। তিনি জানিয়েছেন, এই আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার পিছনে যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে তাও অত্যন্ত রহস্যজনক। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ হিসেবে ভারতে থাকতে না পারার কথা বলা হয়েছে। আর তার জেরেই তাঁরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা এই আধার কার্ড নিষ্ক্রিয়ের সংখ্যা লোকসভা ভোটের আগে আরও বাড়বে। যদিও এদিন সুপ্রভাত গাইন জানিয়েছেন, যাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে তাঁরা বেশিরভাগই ১১ থেকে ৩০ বছর আগে ভারতে এসেছেন। কিন্তু তাঁদের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড-সহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পরিচয়পত্রই আছে। যদি তাঁদের ভারতে থাকাটা বেআইনি হয় তাহলে এই কার্ডগুলো বেআইনিভাবে কারা করে দিয়েছেন -প্রশ্ন তোলেন তিনি। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক বাসুদেব যশ, রীতা বিশ্বাস, কার্যকারী সভাপতি গৌতম বিশ্বাস, ধর্মপ্রচারক জয় গোঁসাই প্রমুখরা।

Exit mobile version