ট্যাব কেলেঙ্কারিতে ধৃতদের জামিনের জন্য টাকা চেয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে উড়ো ফোনের অভিযোগ
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ট্যাব কেলেঙ্কারিতে এবার ধৃতদের বাড়ির লোকদের কাছে উড়ো ফোনে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিল। ইতোমধ্যেই এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা সাইবার থানা তদন্তও শুরু করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় মালদা থেকে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে একজন চুক্তিভিত্তিক কমপিউটার শিক্ষক যেমন রয়েছেন, তেমনি ধৃতদের মধ্যে একজনের বাবা তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বলেও জানা গেছে। ফলে ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় তৃণমূল যোগ নিয়েও জলঘোলা শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত শোভন সরকার রকি সেখের কাছ থেকে একটি পুরোনো কমপিউটারও কেনে। ফলে এব্যাপারে যে পরিকল্পনামাফিক গোটা বিষয়টি ঘটেছে তাতে যেমন পুলিশ প্রায় নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি শুধু ট্যাবের টাকাই নয়, সম্ভবত, রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের টাকাও একইভাবে হাতানোর পরিকল্পনায় ছিল কিনা এরা – তাই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। জানা গেছে, শোভন সরকারের বাবা জীতেন্দ্র সরকার মালদা কালিয়াচক -৩-এর তৃণমূল কংগ্রেসের এসসি সেলের ব্লক সভাপতি। নিজে বিড়ি শিল্পীও। রয়েছে জমি জায়গাও। ছেলেকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তিনি বৃহস্পতিবার বর্ধমানে আসেন। এদিন জীতেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, মাস দেড়েক আগে তাঁর ছেলে স্থানীয় আদর্শ গোল্ড ব্যাংকে চাকরি পেয়েছে। কালীপুজোর সময় বিয়েও করে। এমনকি নতুন বউকে জামাকাপড় কিনে দিতে নিজের মোটরবাইকটি ৪ হাজার টাকায় বন্ধকও রাখে। সেই ছেলে কখনই এই ট্যাব দুর্নীতিতে জড়িত থাকতে পারেনা। তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে জীতেন্দ্রনাথবাবু দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে এলাকার ভাল ফুটবলার। কেন তাকে ফাঁসানো হল তাই তাঁরা বুঝতে পারছেন না। এদিন বর্ধমানের সাইবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন, জীতেন্দ্রবাবু। তিনি জানিয়েছেন, একটি ফোন নাম্বার থেকে তাঁকে প্রায় ৮ বার ফোন করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে নিজেকে অ্যাডভোকেট বলে পরিচয় দিয়ে তাঁকে বলা হয়েছে, ১০ মিনিটের মধ্যে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা না দিলে তাঁর ছেলের জামিন হবে না। ৬ বছরের জেল হবে। জীতেন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন, তাঁর কাছে টাকা ছিল না, তাই তিনি টাকা দেননি। এমনকি তাঁর ছেলেকে পূর্ব বর্ধমান পুলিশ গ্রেপ্তার করায় কেন পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ফোন করা হচ্ছে বলে তাঁকে জানানো হচ্ছে – সেটাই তাঁর কাছে খটকা লাগে। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, গোটা বিষয়টি সাইবার থানায় জানাবেন। এরপরই তিনি সাইবার থানায় আসেন। জীতেন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, অপরাপর গ্রেপ্তার হওয়া ছেলেদের অভিভাবকদেরও একইভাবে টাকা চাওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। কারও কাছে ২০ হাজার, কারও কাছে ১৯ হাজার টাকাও চাওয়া হয়েছে। বস্তুত, ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই নতুন করে উকিলের নাম করে এভাবে টাকা চেয়ে প্রতারণার চেষ্টাকে ঘিরে এবার ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।