বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান শহরের ২ নম্বর শাঁখারিপুকুর এলাকায় মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে স্কুল ভবন গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অবশেষে মামলা রুজু করল পুলিস। এনিয়ে বিজেপির ৩ নম্বর নগর মণ্ডলের সভাপতি সুমিত দত্ত বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমা শাসকের কাছে একটি চিঠি দেন। তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুরসভার চেয়ারম্যান, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) ও বর্ধমান থানার আইসিকে নিের্দশ দেন মহকুমা শাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস। এরপরই বর্ধমান থানার পুলিস নড়েচড়ে বসে। এসডিও-র চিঠি পেয়ে বৃহস্পতিবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮, ৪২৭ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করেছে বর্ধমান থানা। শুক্রবার বর্ধমান সি জে এম আদালতে মামলার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এফআইআরে স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদকের নাম রয়েছে। থানার এক অফিসার বলেন, স্কুলভবন ভাঙা নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, যেসব ধারায় মামলা করা হয়েছে তার সবক’টি জামিনযোগ্য। জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ায় ঘটনায় জড়িতদের আড়াল করার অভিযোগ উঠছে পুলিসের বিরুদ্ধে। ঘটনার ৬ দিন পর এফআইআর দায়ের হওয়া নিয়ে নানা মহলে চর্চা চলছে। স্কুলভবন ভাঙার পিছনে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে বলে বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান। স্কুলভবন ভাঙার পর পুরসভা অথবা স্কুলশিক্ষা দপ্তর কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রভাবশালী যোগের তত্ত্ব আরও জোরদার করেছে। তার উপর জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শাঁখারিপুকুর এলাকায় কয়েকবছর ধরে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে থাকা একটি প্রাথমিক স্কুলের ভবন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ভবনটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলভবন ভাঙা নিয়ে বিরোধি দলগুলি সোচ্চার হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির তরফে প্রশাসনের নানা মহলে নালিশ জানানো হয়। শাসক দলের মদত থাকার কারণে স্কুলভবন ভাঙায় প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে বলে বিরোধিরা অভিযোগ করে। এরপরই স্কুলভবন ভাঙা নিয়ে কলকাতা হাইকোের্ট জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় স্কুলশিক্ষা দপ্তর, জেলাশাসক, পুলিস সুপার, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান, জেলা স্কুল পরিদর্শকের পাশাপাশি বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ককেও পক্ষভুক্ত করা হয়েছে।