E Purba Bardhaman

মৃতার প্রেমিককে একমাত্র অভিযুক্ত করে নান্দুরে তরুণী খুনের মামলায় আদালতে চার্জশিট পেশ

Ajay Tudu arrested for murdering tribal girl in Burdwan

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান থানার নান্দুরের ঝাপানতলায় তরুণীকে খুনের সাড়া জাগানো মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। চার্জশিটে খুনে একমাত্র অভিযুক্ত করা হয়েছে মৃতার প্রেমিক অজয় টুডুকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানা এলাকায় তার বাড়ি। শুক্রবার কেসের তদন্তকারী অফিসার সফিউর রহমান আদালতে চার্জশিট পেশ করেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ (১) ও ২৩৮ ধারায় অজয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়েছে। ঘটনায় ৪৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করার কথাও জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। ফরেন্সিক ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের রিপোর্ট মেলার পর অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। অজয় বর্তমানে সংশোধনাগারে রয়েছে। বৃহস্পতিবার তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বর্ধমান জেলা আদালতের অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারক। শনিবার (অক্টোবর) তাকে সংশোধনাগার থেকে আদালতে পেশ করা হবে। সেদিনই মামলাটি দায়রা আদালতে পাঠানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। মামলাটি যাতে ফাস্ট ট্র্যাক কোের্ট বিচার হয় তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার পক্ষ। মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করা হতে পারে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে খুন হন তরুণী প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা। নান্দুরের ঝাপানতলা এলাকায় তাঁর বাড়ি। তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। আরজি কর কাণ্ডের মধ্যেই প্রিয়াঙ্কার মৃত্যু নিয়ে সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করে বিরোধী দলগুলি। ঘটনার কিনারায় সিট গঠন করা হয়। ২৪ আগস্ট রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থেকে অজয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকের মাধ্যমে অজয়ের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার ভাব-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনের মধ্যে নিয়মিত ফোনে কথাবার্তা হত। তাঁরা দু’জনেই কাজের সূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। সেখান থেকে ১২ আগস্ট ট্রেনে চেপে তাঁরা হাওড়া স্টেশনে নামেন। অজয় কলকাতার বাগুইআটিতে স্কুলের এক বন্ধুর বাড়িতে যায়। প্রিয়াঙ্কা বাড়ি চলে আসেন। ঘটনার দিন ট্রেনে চেপে গাংপুরে আসে অজয়। প্রিয়াঙ্কাকে সে বেশ কয়েকবার ফোন করে। যদিও প্রিয়াঙ্কা তার ফোন ধরেন নি। তারপরই প্রিয়াঙ্কার বাড়ির কাছে গিয়ে তাঁকে ফোন করে ডেকে আনে অজয়। সেখানে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। আচমকা সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে প্রিয়াঙ্কার গলার নলি কেটে দেয় অজয়। পুলিশ এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন বিশ্লেষণ করে ঘটনায় যে অজয় জড়িত, সে সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেছে চার্জশিটে। খুনের পর প্রিয়াঙ্কার ফোনটি নিয়ে চলে যায় অজয়। ফোনের সাহায্যে পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে প্রিয়াঙ্কার অ্যাকাউন্ট থেকে অজয়ের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার হওয়ার কথাও চার্জশিটে জানিয়েছে পুলিশ। অজয়ের স্কুলের বন্ধু এবং ঘটনার দিন তাকে এলাকায় ঘুরতে দেখা বেশ কয়েকজনের বয়ান নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। খুনের সময় দু’জনেরই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন যে এক জায়গায় ছিল তাও চার্জশিটে জানানো হয়েছে।

Exit mobile version