বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- স্টিম ইঞ্জিনকে হেরিটেজ হিসাবে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার উদ্যোগ নিল ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ তথা পূর্ব রেল। বর্ধমান ষ্টেশন ঢোকার মুখে বৃহদাকার একটি স্টিম ইঞ্জিনকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। ইতিমধ্যেই সেই ইঞ্জিনের ওপর একপ্রস্থ কালো এবং রূপালি রংয়ের প্রলেপও দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান ষ্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানিয়েছেন, এখনও অফিসিয়াল চিঠিপত্র তাঁদের হাতে না এলেও এই সিদ্ধান্তের খবর তাঁর কাছেও এসেছে বিভিন্ন মারফতেই। তিনি জানিয়েছেন, এমনিতেই বর্ধমান জংশনের ১নং প্ল্যাটফর্মের ওপর দিয়ে যাওয়ার কথা ইষ্টার্ণ ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর। ইতিমধ্যেই মোগলসরাই থেকে কলকাতা পোর্ট পর্যন্ত মোট ৬৫৬ কিমি নয়া এই রেলপথের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই ওই রেলপথের জন্য বর্ধমান ষ্টেশনের ১নং প্ল্যাটফর্ম ভাঙা পড়বে। একইসঙ্গে ১নং প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন ষ্টেশন ম্যানেজারের অফিস, বিশ্রামাগার, টিকিট কাউন্টার, অনুসন্ধান কাউণ্টার প্রভৃতি প্রায় সব অফিসই ভাঙা পড়ার সম্ভাবনা। তাই বর্ধমান ষ্টেশন এলাকাকে সৌন্দর্য্যায়ন করার প্রশ্নে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিনি জানিয়েছে্ন, বর্ধমান ষ্টেশনে একাধিক উন্নয়ন হয়েছে। দৃষ্টিহীনদের জন্য আলাদা চলাচলের পথ তৈরী হয়েছে প্ল্যাটফর্মে। খুব শীঘ্রই বসতে চলেছে চলমান সিঁড়ি। আর তারই মাঝে ষ্টেশনের বাইরের অংশের ভোল বদলাতে আস্ত বৃহদাকার একটি স্টিম ইঞ্জিনকে খাড়া করার মধ্যে দিয়ে ভারতীয় রেলের পরম্পরাকেই তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে শেষ চলেছিল ভারতীয় স্টিম ইঞ্জিন। দূর থেকে স্টিম ইঞ্জিনের সেই বাঁশির শব্দে ছুটে আসা বিখ্যাত ঘসঘসানির আওয়াজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় রেলের একাধিক উন্নয়ন হলেও ছোট লাইনের ট্রেন থেকে স্টিম ইঞ্জিনের সেই ঐতিহ্য আজও সাধারণ মানুষের মনে গাঁথা হয়ে রয়েছে। আর তাই জনসাধারণের সামনে স্টিম ইঞ্জিনের সেই ইতিহাসকে তুলে ধরতে বর্ধমান ষ্টেশনের বাইরে আস্ত একটি ইঞ্জিনকে প্রতিস্থাপিত করার উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।