বিপুন ভট্টাচার্য, রায়না (পূর্ব বর্ধমান) :- রায়না থানার নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের সিপটা গ্রামে টাকা চেয়েও না পাওয়ায় মদ্যপ ছেলে মাটিতে ফেলে বুকে লাথি মেরে খুন করল মাকে। মৃতের নাম জ্যোত্স্না সিং (৫০)। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায়। মঙ্গলবার রাত্রে এই ঘটনার পর প্রতিবেশীরাই তাকে ধরে ফেলে বেধড়ক মারধোর দেয়। পরে রায়না থানার পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে রায়না থানার একাধিক কেসে অভিযুক্ত গুণধর ছেলে বাসুদেব সিং-কে। প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় মাস ছয়েক আগে বাসুদেবের অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদে তাঁকে ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। এরপর থেকেই সে প্রতিদিন আকণ্ঠ মদ খাওয়া শুরু করে। মঙ্গলবার রাতেও সে মদ খেয়ে বাড়ি ঢোকে। সম্প্রতি জ্যোত্স্না সিং রাজ্য সরকারের বাংলা আবাস যোজনা খাতে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পেয়ে ঘর করেছেন। ছেলে বাসুদেব সিং-এর সন্দেহ ছিল সবটাকা বাড়ি তৈরী করতে খরচ হয়নি। কিছু টাকা মায়ের কাছে রয়ে গেছে। আর সেই টাকার জন্যই সে প্রায়শই মদ খেয়ে এসে বাড়িতে চড়াও হত। মঙ্গলবার রাতেও সেই একইভাবে মদ খেয়ে এসে চড়াও হয়। বাড়িতে অশান্তি শুরু করায় তার প্রতিবাদ করেন দাদু অজিত সিং। এরপরই সে দাদুর ওপর চড়াও হয়। দাদুকে মারধোর করতে শুরু করে। এই সময় জ্যোত্স্নাদেবী তাঁর বাবাকে ছাড়াতে এগিয়ে যান। হাতের কাছে ঝাঁটা পেয়ে তাই দিয়েই তিনি ছেলেকে মারতে থাকেন। এইসময় বাসুদেব দাদুকে ছেড়ে মায়ের চুলের মুঠি ধরে মারতে থাকে। তাঁকে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বার করে গ্রামের ঢালাই রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ছুঁড়ে ফেলেন। এরপরই সজোরে মায়ের বুকে লাথি মারতে থাকেন। গ্রামবাসীরাই ছুটে এসে বাসুদেবকে ধরে ফেলেন। দেওয়া হয় উত্তম মধ্যমও। দ্রুততার সঙ্গে জ্যোত্স্নাদেবীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার সকালে রায়নার মহেশবাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পুলিস বাসুদেবকে গ্রেপ্তার করে। এদিন তাকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও বাসুদেবের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে রায়না থানায়। বুধবারই তার বর্ধমান আদালতে হাজিরা দেবার কথাও ছিল।