E Purba Bardhaman

আগামী ২ ও ৩ মার্চ বর্ধমানে আয়োজিত হতে চলছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স সোসাইটির রাজ্য সম্মেলন

The State Conference of West Bengal Voluntary Blood Donors Society is going to be organized in Burdwan on March 2 and 3.

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গোটা রাজ্য জুড়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্তের জোগান ঠিক রাখতে রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রায় ১৩০-এরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে রাজ্য সম্মেলন হতে চলেছে ২ ও ৩ মার্চ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স সোসাইটির রাজ্য আহ্বায়ক কবি ঘোষ জানিয়েছেন, সামনেই লোকসভা ভোট, তার ওপর গরমের সময়। ফলে এই সময়ে স্বাভাবিকভাবেই রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কম হবে। আর তার ফলে দেখা দেবে জায়গায় জায়গায় রক্তের সংকট। ব্যাহত হবে লাইফ লাইন। এই অবস্থায় কীভাবে কী করলে রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখা যাবে তা নিয়েই এই দুদিনের সম্মেলনে আলোচনা এবং একটি পরিকল্পনাও তাঁরা তৈরি করতে চলেছেন। এই সম্মেলনে প্রায় ৩৩৫জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। যার মধ্যে থাকছেন ৩৭জন মহিলাও। কবি ঘোষ জানিয়েছেন, বছরে গোটা রাজ্যে প্রয়োজন হয় প্রায় ১০.৫ লক্ষ ইউনিট রক্ত। ২০২৩-২০২৪ বর্ষে রাজ্যে ৯ লক্ষ ইউনিট সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে এই সংগঠন ১ লক্ষ ইউনিট ২৩ টি জেলা থেকে সংগ্রহ করেছে। এদিন তিনি জানিয়েছেন, প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন রক্তদান করেন। এই সংখ্যাকে না বাড়াতে পারলে রক্তের যোগানকে অক্ষুণ্ন রাখা যাবে না। তিনি জানিয়েছেন, ২ মার্চ এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন পদ্মশ্রী অরুণোদয় মন্ডল। উপস্থিত থাকবেন পদ্মশ্রী পাওয়া দুই শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায় এবং কাজী মাসুম আকতার। এছাড়াও এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন চেন্নাই থেকে এল শান্তারাম এবং বাংলাদেশ থেকে মহম্মদ মহিদুল্লা। ৩ মার্চ বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে বাঁচাবো লক্ষ প্রাণ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বর্ধমানে পদযাত্রার আয়োজনও করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রক্তদান করার বিষয়ে তাঁরা উৎসাহ দিচ্ছেন। কিন্তু এরই মাঝে ভয়ংকর বিপদ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে রক্তদান শিবির আয়োজন করার প্রবণতা। এর ফলে যাঁর রক্ত নেওয়া যায়না তিনিও লোভের বশবর্তী হয়ে রক্তদান করছেন। আখেরে ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। তিনি জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে ৩৩ টা বেসরকারি ৫ টা অসরকারি এবং ৮৭ টা সরকারি ব্ল্যাড সেন্টার আছে। তাঁরা এই সরকারি ৮৭ টা ব্ল্যাড সেন্টারেরই আধুনিকীকরণ চাইছেন। প্রতিটি সেন্টারেই যেন থাকে ব্ল্যাড সেপারেশন ইউনিট। এছাড়াও প্রতিটি জেলায় জেলায় ভ্রাম্যমাণ রক্ত সংগ্রহের গাড়ি চালুরও দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান রিজিওনের ভ্রাম্যমাণ একটি রক্ত সংগ্রহের গাড়ি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম এই ৩ জেলার ৮টি ব্ল্যাড সেন্টারের হয়ে কাজ করে। একইসঙ্গে ব্লাড সেন্টারগুলোতে কর্মীর অভাব মেটানোরও দাবি রাখছেন তাঁরা। সুষ্ঠভাবে লাইফ লাইন ঠিক রাখতে সরকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর মধ্যে সেতু বন্ধন চাইছেন তাঁরা। এজন্য সরকারের কাছে তাঁদের দাবি র‍্যাশনাল ইউজ অফ ব্ল্যাড করার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হোক। প্রসঙ্গত কবিবাবু জানিয়েছেন, মোট যে রক্ত সংগৃহীত হয় তার মধ্যে ৩০ শতাংশ থ্যালাসেমিয়া, ২০ শতাংশ অ্যানেমিয়া রোগীর জন্য ব্যবহার হয়। এছাড়াও রয়েছে ক্যানসার এবং অস্ত্রোপচারের মত কেসগুলি। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা চাইছেন স্কুল কলেজেগুলি থেকেই থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং শুরু হোক। এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ফজলুল হক এবং রাজ্য সহ সম্পাদক রাজেশ পালিত।

Exit mobile version