বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শিক্ষার্থী নিগ্রহের অভিযোগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের পড়ুয়া বিক্ষোভ মিছিল করলেন গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে। সোমবারের এই বিক্ষোভ মিছিলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা অংশ নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। মিছিলে অংশ নেওয়া আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুন্সি আসরাফুল করিম জানিয়েছেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ৫-৬ বছর ধরে অশান্তি চলছে। বছর দেড়েক ধরে সমস্যার কথা তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কোনও ফল না পাওয়ায় ফের গত ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁরা রাজবাটি চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানাতে জান। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের কথা না শুনে ছাত্রছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রার নিজেও পড়ুয়াদের গায়ে হাত দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এমনকি নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়েও মারধর করা হয়েছে বলে আসরাফুল করিম জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের নিগ্রহের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ নেয় নি। উলটে রেজিস্ট্রার বলেছেন ছাত্রছাত্রীরাই ওনার গায়ে হাত দিয়েছেন। তাই তাঁরা দাবি করছেন, তাঁরা গায়ে হাত দিয়ে থাকলে সেই ফুটেজ প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হোক। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ তাঁদের যা শাস্তি দেওয়ার দেবেন। আর তা যদি না হয় সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারকে ক্ষমা চাইতে হবে, নাহলে পদত্যাগ করতে হবে। এর পাশাপাশি আসরাফুল করিম জানিয়েছেন, যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করছে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। সিকিউরিটি-সহ যেসমস্ত কর্মীরা এই অন্যায় করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে রেজিস্ট্রার প্যারালাল রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন আসরাফুল করিম। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছাত্রী এলিসা শবনম মিদ্দা জানিয়েছেন, নিরাপত্তারক্ষীদের প্রথম কাজ তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু তাঁরা সেটা না করে পড়ুয়াদের উপর আক্রমণ করেছেন। ছাত্র, ছাত্রী কেও বাদ যায়নি। তাঁরা চাইছেন এই ঘটনার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হোক। তাঁদের দোষ দেখা গেলে যা শাস্তি দেওয়া হবে তা তাঁরা মাথা পেতে নেবেন। আর যদি রেজিস্ট্রার যে দাবি করেছেন সেটা প্রমাণ না হয় তাহলে ওনাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং পদত্যাগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন এলিসা শবনম মিদ্দা।
উল্লেখ্য, ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, আইন বিভাগের একজন ডিসকলেজিয়েট ছাত্র গত ২০১৮ সাল থেকে ছাত্রছাত্রী-সহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের ওপরও লাগাতার জুলুম চালিয়ে যাচ্ছেন। এব্যাপারে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও অজানা কারণে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি। এর ফলে কলেজের সুষ্ঠু পঠনপাঠন ব্যবস্থা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, অভিযোগ জানানোর পরও কোনো সুরাহা না হওয়ায় গত বুধবার ফের ছাত্রছাত্রীরা রেজিস্ট্রারের কাছে গেলে এই ঘটনা ঘটে।