বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশকে না মেনে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্যের ডাকা ইসি মিটিং ভেস্তেই দিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপক, কর্মচারী ও ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ মাস পরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু তৃণমূল প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন ও শিক্ষাকর্মীদের বাধায় ইসি সদস্যরা বৈঠকে যোগ দিতেই পারলেন না। অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র-সহ অন্যান্য সদস্যরা রাজবাটীর এস্টেট অফিসের ঘরে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন। দুপুরের পর তাঁরা রাজবাটি থেকে বেড়িয়ে যান।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ইসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল উপাচার্যের ঘরে। উল্লেখ্য, এই বৈঠক নিয়েই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের টানাপড়েন চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে নির্দিষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য কোনও ভাবেই ইসি বৈঠক করতে পারবেন না। এব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে ইসি বৈঠকের অনুমতির জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। জানা গেছে, এব্যাপারে শিক্ষা দফতর কোনও অনুমতিই দেয়নি। তা সত্ত্বেও এদিন “পড়ুয়াদের স্বার্থে” ইসি বৈঠক ডাকেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরি। এদিন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র জানিয়েছেন, “অফিসের যাওয়ার রাস্তার গেটে ছাত্র, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ তালা দিয়েছে। সে জন্য বৈঠক করা গেল না। পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে পড়ুয়াদের স্বার্থে যাতে ইসি বৈঠক করা যায়, সেটা দেখব।”। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই দাবি উঠেছে, জাতীয় শিক্ষা নীতি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি বদলাতে হবে। আগেই ওই নীতি বদলে আচার্যের সই হয়ে আইনে পরিণত করা উচিত ছিল। তা হয়নি বলে প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে পারা যাচ্ছে না। সেই কারণেই ইসি খুব জরুরি ছিল। উপাচার্যের দাবি, “ ইসি না হওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে সমস্যা মিটল না।” এদিকে, এদিন টিএমসিপি রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোন্দেকার আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সে জন্যই ইসির সদস্যদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”