গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- উড়ালপুলের দাবীতে ১৯ নং জাতীয় সড়কের গলসীর গলিগ্রামে পথ অবরোধ করলেন কয়েকশো গ্রামবাসী। তাঁদের সঙ্গে অবরোধে সামিল হল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এই ঘটনার জেরে দীর্ঘক্ষণ বর্ধমান থেকে দুর্গাপুর গামী রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আটকে পড়ে বহু গাড়ি। আর এই অবরোধেই আটকে পড়লো আবাস যোজনার তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। প্রায় মিনিট ৪০ অবরোধে আটকে থাকার পর সময় নষ্ঠ হচ্ছে দেখে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে রওনা দেন টিমের সদস্যরা। যদিও তাঁরা পায়ে হেঁটে অবরোধ পেড়িয়ে কিছুটা যেতে না যেতেই অবরোধ উঠে যায়। আর এই ঘটনার পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এদিন অবরোধকারী গ্রামবাসী অসীম কুমার চক্রবর্তী, সমরেশ ঠাকুর প্রমুখরা জানিয়েছেন, গলসীর গলিগ্রামে আণ্ডারপাশ কিংবা উড়ালপুলের জন্য তাঁরা ২০২২ সালের ৭ আগষ্ট থেকে আন্দোলন করে চলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ১৯ নং জাতীয় সড়কের এই মোড় দিয়েই আশপাশের প্রায় ২৫-৩০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিনই যাতায়াত করেন। যাতায়াত করেন উচ্চগ্রাম হাইস্কুল, বনসুজাপুর হাইস্কুল সহ একাধিক স্কুলের কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। ফলে কার্যত প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, এব্যাপারে ১৯ নং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সহ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী সহ জেলা প্রশাসনের সর্বত্র স্তরে আবেদন জানিয়েছেন এখানে আণ্ডারপাশ কিংবা উড়ালপুল করার জন্য। কিন্তু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটেনি তাঁদের। সমরেশ ঠাকুররা জানিয়েছেন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ তাঁদের বারবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। আর তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা এই অবরোধ করেছেন। অবিলম্বে তাঁদের এখানে আণ্ডারপাশ কিংবা উড়ালপুল করা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই আন্দোলন চলতেই থাকবে। প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে তাঁরা হাঁটবেন। এদিকে, এই অবরোধের জেরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল আটকে পড়ায় বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস এই অবরোধকে সাজিয়ে ছিল। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবী, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল যাবার ঠিক আগেই এই অবরোধ শুরু হল আর তাঁরা হেঁটে এলাকা পাড় হতে না হতেই ফের অবরোধ উঠে গেল – দুইয়ের মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে। মৃত্যুঞ্জয়বাবু দাবী করেছেন, অবরোধের জেরে প্রথম যে গাড়িটি আটকেছিল সেটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের গাড়ি। আর এর থেকেই প্রমাণিত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে আটকাতেই তৃণমূল পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এভাবে আটকে রাখা যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের এই তদন্ত তদন্তের গতিতেই হবে। কেউ পার পাবে না। অন্যদিকে, এদিন এই অবরোধের জেরে আটকে পড়া কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য প্রদ্যুম্ন করকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, সম্ভবত স্থানীয় কোনো ইস্যুতে এলাকার মানুষ অবরোধ করেছেন। তাঁরা আটকে পড়ায় অসুবিধা হলেও তাঁরা অসুবিধা পার করেই গন্তব্যে যাবেন। গত দুদিন ধরে বর্ধমানে আবাস যোজনার তদন্তে এসে কোনো অসহযোগিতা পাচ্ছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছেন, সর্বতভাবে তাঁরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছেন। কোথাও কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। অন্যদিকে, এদিন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা অবরোধস্থলে এসে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করার পর অবরোধ উঠে যায়।