E Purba Bardhaman

এবার ত্রিশূল হাতে দিলীপ ঘোষ ‘স্বচ্ছ ভারত, স্বচ্ছ রাজনীতি’ করতে চান

This time Dilip Ghosh wants to make 'Swachh Bharat, Swachh politics' with trident

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এবার ত্রিশূল হাতে দিলীপ ঘোষ। রবিবার পয়লা বৈশাখ তথা নববর্ষের দিন সকালে বর্ধমানের আলমগঞ্জে বাবা বর্ধমানেশ্বর মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর ত্রিশূল হাতে দিলীপ ঘোষকে মন্দির থেকে বের হতে দেখা যায়। আর তার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। মন্দির থেকে বেড়িয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেন, বাবার কাছ থেকেই ত্রিশূল লাভ হল। যখনই পাপ ও অশুভ শক্তির প্রভাব বেড়েছে তখনই বাবা হাতে ত্রিশূল তুলে নিয়েছেন। তাণ্ডব নিত্য করেছেন। আমার কুলদেবতা মহাদেব, তার প্রেরণায় ত্রিশূল নিয়ে অভিযান করে স্বচ্ছ ভারত ও স্বচ্ছ রাজনীতি করতে চাই। ত্রিশূল তার প্রতীক। এই ত্রিশূল আত্মরক্ষার জন্য কিনা তার উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, আত্মরক্ষা নয় দেশ রক্ষা। সব রক্ষা হয়ে যাবে। এদিকে, দিলীপ ঘোষের হাতে ত্রিশূল নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে চলেছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, এই ত্রিশূল নিয়ে ভোটারদের ভীত সন্ত্রস্ত করতে চাইছেন বিজেপি প্রার্থী। ত্রিশূল দিয়ে কখনও স্বচ্ছ ভারত অভিযান হয়না। উনি বিভ্রান্ত করছেন। এব্যাপারে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবার আবেদন জানাচ্ছেন। অন্যদিকে, শনিবার দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে সরব হন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। শনিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান টাউনহলে তৃণমূল কংগ্রেসের টোটো চালক ইউনিয়নের এক সভায় প্রাতঃভ্রমনে দিলীপ ঘোষ লাঠি হাতে বের হওয়াকে কটাক্ষ করে কীর্তি আজাদ বলেন, ‘উনি তো লাঠি নিয়ে ঘোরেন। কেন ঘোরেন ভগবানই জানেন। কেউ কেউ বলে, ওনার সাথে লোক নেই। দু চারটে কুকুর থাকে। ওদেরই মারতে থাকেন। রবিবার এর উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমার লোকেরা তো আর আমাকে তাড়া করে না, আমাকে পালাতে হয় না নিজের লোকের চাপে। লোকে ওনাকে দেখছে মজায়। একবার ঘোড়ায় চড়ছেন, অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন। এটা কী ধরনের গণতন্ত্র? এভাবে ভোট পাওয়া যায়? উনি দাঁড়িয়েছেন না ওনার স্ত্রী দাঁড়িয়েছেন? উনি ড্রামা করছেন। তারপর নাচানাচি করে রাস্তায় বাঁদর খেলা দেখানোর মতন নেচে লোক জড়ো করার চেষ্টা করছেন। কার সাথে লোক আছে না আছে তা একবার আমার সঙ্গে হেঁটে দেখুন। এদিন আলমগঞ্জে দিলীপ ঘোষের চা-চক্রে স্থানীয় বাসিন্দা বিজেপি কর্মী বিনোদ প্যাটেল হাজির হন। তাঁর দোকান তৃণমূল কংগ্রেস ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন দিলীপবাবুকে। এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, তৃণমূল অফিসগুলো যখন তালা পড়বে তখন এইসব দোকানগুলো খুলবে। এবার সেটা হবে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমি উত্তরবঙ্গে টানা পড়ে আছি, বিজেপি এসে কোকিলের মতো ঘুরে চলে যায়। এর জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, উত্তরবঙ্গে উনি পড়ে থাকুন, বসে থাকুন, শুয়ে থাকুন কিছু এসে যায় না। উত্তর বাংলা, জঙ্গলমহলের মানুষ ওনাকে শিক্ষা দিয়েছিল। কাজ না করে শুধু মিথ্যা কথা বললে, আর টাকা চুরি করলে কি হবে সেটা দেখুন। তিনি বলেন, ওনার উপায় নেই। যাবেন কোথায়? জেতার চান্স কোথাও নেই। উনি মানুষের মন গলাবার চেষ্টা করছেন। মমতা বলেছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে কালীঘাটে এসে পুজো দিয়েছি। আবার উত্তরবঙ্গে ফিরে যাচ্ছি। দিলীপবাবু বলেন, উনি গোয়া গিয়েছিলেন, আসাম ত্রিপুরাও গিয়েছিলেন কি হল? ওখানকার লোক দেখিয়ে দিয়েছে, টিএমসির কি ওজন আছে। লোক একবার ছেড়ে দিয়েছে। আর পিছন ফিরে তাকাবে না। কংগ্রেসকে ছেড়ে দিল, সিপিএম কে ছেড়ে দিল, এবার টিএমসি কে ছাড়তে শুরু করেছে। দেখা যাবে কে কোথায় যায়। এদিন বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপনকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ। এব্যাপারে তিনি বলেন, টিএমসি চলে গেলে দিনটাও চলে যাবে। পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গ দিবস কীভাবে হলো আমরা জানি না। পয়লা বৈশাখ কবে শুরু হয়েছে সেটাও ওনারা জানেন না। পশ্চিমবঙ্গ কবে শুরু হলো এটাও জানেন না। পশ্চিমবঙ্গকে মিটিয়ে দিয়ে বাংলা করার চেষ্টা করছেন, আবার পশ্চিমবঙ্গ দিবসও করছেন।

Exit mobile version