বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এবার বর্ধমানের ঐতিহ্যবাহী বর্ধমান রাজ কলেজের অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডল সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষামন্ত্রী-সহ জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে থ্রেট কালচারের অভিযোগ দায়ের করলেন। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমান শহর জুড়ে। মঙ্গলবার নিরঞ্জনবাবু তাঁর নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সরাসরি অভিযোগ তুললেন বর্তমান ছাত্র, বহিরাগত ছাত্র-সহ কেউ কেউ তাঁকে নানাভাবে মানসিক অত্যাচার করছেন। তাঁর সন্তানসম ছাত্ররা তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত প্রায় ৩ দিন ধরে বর্ধমান রাজ কলেজে কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ তুলে নিরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের দাবি অত্যন্ত ন্যায়সংগত। তিনি জানিয়েছেন, সত্যিই বর্ধমান রাজ কলেজে সামগ্রিক উন্নয়ন করা যাচ্ছে না গভর্নিং বডির অনুমোদন না থাকার জন্য। তিনি জানিয়েছেন, উন্নয়ন খাতে যে টাকা ব্যয় করা দরকার, তার সিংহভাগ টাকাই এখন রাজ কলেজের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে চলে যাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, সারাবছরে প্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা এই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে চলে যাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, অত্যন্ত অপরিকল্পিতভাবে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এরই পাশাপাশি উন্নয়ন খাতের টাকাকে ফিক্সড করে দেওয়া হচ্ছে। আর সেই ফিক্সড ডিপোজিটের টাকার সুদে কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাস্তবিকই উন্নয়ন হচ্ছে না। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ৮ মাস আগে কলেজের ফেস্টের জন্য বরাদ্দ টাকার ইউটালাইজেশন তিনি এখনও পাননি। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষ দুজন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টকে নিয়ে এসেছিলেন এই ফেষ্টের জন্য। দুদিন এই ফেস্টের জন্য ১৫ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু তার যথাযথ হিসাব তাঁকে দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে হিসাব চাওয়ায় তাঁকে আইনী নোটিশ ধরানো হয়েছে। এদিন রাজ কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তাঁকে পদত্যাগ করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি কার্যত আতঙ্কে রয়েছেন। কখন কী বিপদ তাঁর ওপর ঘনিয়ে আসবে তিনি বুঝতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়েই এই থ্রেটের বিরুদ্ধে গোটা বিষয় জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীকে। তিনি চান গোটা ঘটনার একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। যদিও এই বিষয়ে স্বরাজ ঘোষ এবং অভিযুক্তদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।