তৃণমূলের পরিবর্তন হচ্ছে; আগে কালো পতাকা দেখাতো, গাড়ি ভাঙতো, এখন শরবত খাওয়াচ্ছে – দিলীপ ঘোষ
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বৃহস্পতিবার ভাতারে জনসংযোগ অভিযানে যাবার পথে বর্ধমানের তালিত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের জলসত্র শিবিরে দিলীপ ঘোষের ঢুকে পড়া, তাঁকে শরবত খাওয়ানো, তৃণমূল নেতার হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে ভাষণ দেওয়াকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়ে গেল। খোদ বর্ধমান ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস নামে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে এই ঘটনার পর শুরু হয়েছে ব্যাপক চর্চা। এক তৃণমূল নেতা লিখেছেন – কোন একটা ভাল কর্মী যদি বিজেপির কোনো লোকেদের সঙ্গে কথা বললে তাদের ঘরছাড়া হতে হয়, এমনকি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়, তারপর কর্মস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাহলে এদেরকে কি করবে। উল্লেখ্য, ওই জলসত্র শিবিরে যখন দিলীপ ঘোষ যান, সেই সময় শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী কাকলী গুপ্ত তা, যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য্য-সহ একাধিক নেতা। এদিন দিলীপ ঘোষকে ঘিরে তৃণমূল নেতাদের সেলফি তোলার ছবিও হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে সোস্যাল মিডিয়ায়। এরপরই নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন কী হবে এদের শাস্তি। এক নেতা লিখেছেন, বিজেপির দালাল, এদের হাতে তৃণমূল ক্ষমতা দিয়েছে। রবি চ্যাটার্জ্জীর (তৃণমূল জেলা সভাপতি) দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একজন লিখেছেন, দলটা যদি নষ্ট হয়, তাহলে উচ্চ নেতৃত্বের জন্যই দলটা নষ্ট হচ্ছে। কারণ দলটা যারা মনপ্রাণ দিয়ে করল তাঁদের কোনো সম্মান, খোঁজ খবর নেই দলের। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য নুরুল হাসান লিখেছেন আমাদের দলের কি সুন্দর প্রচার হচ্ছে। বস্তুত, তৃণমূলের জলসত্র অনুষ্ঠানে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের ঢুকে পড়াকে ঘিরে ক্রমশই তৃণমূলের মধ্যে ঝড় উঠতে শুরু করেছে। আর শুক্রবার খোদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, পরব, উৎসব, দুর্গা পুজো হলে আমি যাব না? প্রণাম করব না? ওরা আমাকে ডেকেছে, আমি তো তাঁদের ধন্যবাদ দিই। দিলীপ ঘোষকে তোমরা ডেকে নিয়েছো, মঞ্চে বসিয়েছো। আমাকে ওরাই ভাষণ দিতে বলেছেন, ওরা শরবত খাইয়েছে, আমার সঙ্গে ওরা গলা মিলিয়েছে, কোলাকুলি করেছে, আমি বললাম শরবতটা বেশি মিষ্টি হচ্ছে। তোমাদের ভালোবাসার জন্য এটা হচ্ছে। তিনি যখন এই মঞ্চে ছিলেন সেই সময় কীর্তি আজাদকে ভোট দিন বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিলো। দিলীপবাবু বলেছেন, মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ বলেছে, জয় বাংলা বলেছে, ইদের প্রোগ্রাম, ধার্মিক প্রোগ্রাম, সৌজন্যের প্রোগ্রাম, সেটা রাজনীতি ছাড়া হওয়া উচিত, ওরা রাজনীতি ছাড়া কিছু বোঝেনা। তৃণমূলের শরবত কি বেশি মিষ্টি – এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, ভালোবাসা থাকলে মিষ্টি তো হবেই, কালকে ওরা ভালোবেসে আমাকে খাইয়েছে, চিনি খাই না কিন্তু ওদের ভালবাসাটা খেয়েছি। দিলীপবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হয় – দুর্গাপুরে স্টিক নিয়ে ঘুরছেন, এখানে শরবত খাওয়াচ্ছে, তৃণমূল কি কোথাও ভয় পেয়েছে? এর উত্তরে তিনি বলেছেন, ভয় পাওয়া নয়, পরিবর্তন হচ্ছে। ওরা আমার গাড়ি ভাঙতো, কালো পতাকা দেখাতো, তারাই এখন শরবত খাওয়াচ্ছে। বুঝতেই পারছেন পরিবর্তন হচ্ছে। এই বদলটা হওয়া উচিত, এটা ভালো।