শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যক্তিগত বেনজির আক্রমণ দেবু টুডুর
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিধানসভায় আম্বেদকরের মূর্তি বেদিকে বিজেপি বিধায়কদের গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে দেবার ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়েই প্রতিবাদ দিবস পালন করল তৃণমূল কংগ্রেস। পূর্ব বর্ধমান জেলার কার্জন গেটের সামনে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় রীতিমত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের এসটি সেলের চেয়ারম্যান দেবু টুডু। যা নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। শালীনতা বিহীনভাবেই এদিন দেবু টুডু শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করায় তীব্র প্রতিবাদ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন কার্জন গেটের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, এসটি সেলের রাজ্য চেয়ারম্যান দেবু টুডু, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলাম, আজিজুল হক মণ্ডল, বিধায়ক খোকন দাস, বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল-সহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়েই দেবু টুডু সরাসরি আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি বলেন, ২৯ তারিখ হঠাৎ করে দেখা গেল বিজেপির যে সভা ছিল অমিত শাহ-ও এসেছিলেন দিল্লি থেকে উড়ে সেই সভাতে যখন লোক হল না, বাংলার মানুষ বয়কট করল, লোক নেই, একদম ফ্লপ সভা হয়েছে। সেই সভা থেকে বদ্ধ উন্মাদ, ষাঁড়, বলদ যাকে বলি, সেই বলদটা সভা থেকে বিফল হয়ে এসে বিধানসভায় ঢুকে কি অসভ্যতা অবভ্যতা করলেন। জাতীয় সংগীত গাওয়া হচ্ছে সেখানে জাতীয় সংগীতকে অবমাননা করলেন, অপমান করলেন, তাতেই থেমে থাকলেন না। গতকাল আমাদের ৩০ তারিখের সভা শেষ হয়ে গেছে। কাল হঠাৎ করে ওই বদ্ধ উন্মাদের দল, অসভ্যের দল কতগুলো পশু মিলে বিধানসভা চত্বরের মধ্যে বাবা সাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে গঙ্গা জল ছেটানোর ব্যবস্থা করলেন। কেন গঙ্গা জল? ওখানে নাকি বিধানসভা চত্বরে বাবা সাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে বীরবাহা হাঁসদা বসেছিল, ওখানে নাকি সন্ধ্যারানী টুডু বসেছিল, জ্যোৎস্না মান্ডি বসেছিল, দেবদাস হাঁসদারা বসেছিল তাই ওই জানোয়ার গুলো, ওই অসভ্য পশুগুলো ওই বিধানসভা চত্বরের মধ্যে গঙ্গা জল ছেটাবার চেষ্টা করছিল। দেখুন বিজেপি যারা আছেন, যারা ভদ্রলোক আছেন তাদেরকে বলছি ভাই আমি বীরবাহা হাঁসদা বলে অপরাধ করলাম? আমি যেখানে বসেছিলাম, আমি যেখানে প্রতিবাদ করছিলাম সেটাকে শুদ্ধিকরণ করার জন্য আপনি গঙ্গাজল এনে শুদ্ধিকরণ করছিলেন শুধু সাঁওতাল বলে? শুধু আদিবাসী বলে? সাঁওতাল গুলো বসেছিল বলে। ওই কাঁথির বেটা, ওই জানোয়ারের বেটা, ওই পশুটা, ওই চোরের বেটা, ওই ডাকাত রাজা কালকে আমাদের আদিবাসীদের শুদ্ধিকরণ করেছে। কি বলছেন এটা ঠিক করেছেন? বাজারের সমস্ত মানুষ যতদূর মাইকের আওয়াজ যাচ্ছে কি বলছেন প্রতিবাদ করবেন না? আমরা সাঁওতাল বলে, আমরা আদিবাসী বলে, আমরা অস্পৃশ্য? আমরা অচ্ছুৎ? কে বলে না ওই জানোয়ারটা বলছে ওই শিশিরের বেটা, চোরের রাজা, ডাকাত রাজা, ওই ডাকাতের বেটা, সাঁওতাল, আদিবাসীদের বলছে অচ্ছুৎ। হ্যাঁ অচ্ছুৎ তো বটেই, গতবছর ঠিক এই সময়ই ওই দেবদাস হাঁসদা, বীরবাহা হাঁসদাকে বলেছিল ওরা তো সাঁওতাল ওরা তো আদিবাসী, ওরা আমার পায়ের নিচে থাকবে, পদতলে থাকবে সাঁওতালগুলো। ওই অসভ্য পশু শুভেন্দু অধিকারী বলেছিল। আমরা অচ্ছুৎ, সত্যিই অচ্ছুৎ আমাদের ছোঁয়া পেলে আপনার পবিত্রতা নষ্ট হবে? আমরা ছোঁবো, গোটা বাংলার সমস্ত আদিবাসীরা, গোটা বাংলায় সমস্ত সাঁওতালরা যেখানে শুভেন্দু অধিকারী যাবে এখান থেকে আহ্বান জানাচ্ছি স্পর্শ করতে হবে, ওকে ছুঁতে হবে, কী করে ছোঁবেন চু কিতকিত, চু কিতকিত, চু কিতকিত, কিতকিত, কিতকিত করে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে বলবেন- দেখ তোকে ছুঁলাম, দেখ কী করবি কর। তোর বাবা অমিত শাহ-কে ডাক, তোর বাবা সিবিআইকে ডাক, ইডিকে ডাক, গোয়েন্দা বাহিনীকে ডাক, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ডাক, তোকে ছু্ঁলাম কিতকিত, কিতকিত, কিতকিত শুভেন্দু অধিকারী। এদিকে, দেবু টুডুর এই বক্তব্য সম্পর্কে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, তৃণমূল একটা অসভ্য দল। ওদের শিক্ষাদীক্ষার অভাব। ওদের কাছ থেকে এর বেশী কিছু আসা করা উচিত নয়। নিজেদের স্বরূপ বেড়িয়ে পড়েছে ওদের। মানুষ ২০২৪-এ এর জবাব দেবে।