গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান পুরসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিমকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির স্থানীয় দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনার বিষয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সেলিম। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। প্রাক্তন কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর অনুগামীরা বর্ধমান থানায় বিক্ষোভ দেখায়। ডিএসপি (সদর) শৌভিক পাত্র ও বর্ধমান থানার আইসি তুষারকান্তি কর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। থানার এক অফিসার বলেন, মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি কারতুজ উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্ত কৃষ্ণা সিং ও অজয় সিং ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। যদিও প্রাক্তন কাউন্সিলরের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের একটি অংশ সন্দেহ প্রকাশ করেছে। পুরো ঘটনাটি সাজানো বলে বিরোধীরা মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তার জন্য এলাকায় দলের হাল খারাপ। দলীয় রিপোের্টও তা উঠে এসেছে। গত বছর সেলিমের বিরুদ্ধে অজয়কে মারধর করার এবং তার বাড়ির মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। তার আগেও অজয়কে মারধরের অভিযোগ ওঠে সেলিমের বিরুদ্ধে। সেই সময় অভিযোগ নেয়নি পুলিস। পরে অজয়ের পরিবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছান। সেখান থেকে নিের্দশ আসার পর ব্যবস্থা নেয় পুলিস। এনিয়ে তৎকালীন এসপি কুণাল আগরওয়াল তদন্তের নিের্দশ দেন। তদন্ত করে ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) চন্দন ঘোষ সেলিমের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা চার্জশিট পেশ করা হয়েছে বলে এসপিকে রিপোর্ট দেন। তার বদলা নিতেই অজয় এবং কৃষ্ণার বিরুদ্ধে সাজানো অভিযোগ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন এলাকার অনেকেই। মঙ্গলকোটের এক ক্রিমিনাল খালাসিপাড়া এলাকায় রয়েছে। তৃণমূলের এক দাপুটে নেতার আশ্রয়ে সে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে অনুমান এলাকাবাসীর।
পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগে বর্ধমান পুরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সেলিম জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দলীয় দপ্তর থেকে তিনি ফিরছিলেন। কালনা রোডের চারতলা গলির কাছে তিনি বাইকে লুকিং গ্লাস থেকে দেখতে পান, কৃষ্ণা ও অজয় তাঁর পিছু নিয়েছে। সেই সময় সেখানে বসে থাকা কয়েকজন যুবক চিৎকার করে গুলি চালানোর বিষয়ে তাঁকে সতর্ক করে। চিৎকার শুনে তিনি সতর্ক হয়ে পড়েন। গুলি চালানোর মুহুের্ত তিনি বাইক নিয়ে পড়ে যান। গুলি তাঁর মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। দ্রুত গতিতে হামলাকারীরা চলে যায়। পুলিসের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে। একটি বাইকও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস। বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শ্যামল রায় বলেন, বিজেপির কেউ হামলায় জড়িত নয়। বিজেপিতে ঝাঁপ মারার জন্য ওই কাউন্সিলর রাস্তা তৈরি করে রাখলেন।