জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান) :- মদের বদলে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হল দুই বন্ধুর। গুরুতর অসুস্থ আরও এক বন্ধু। অন্য বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার সাহাপুর গ্রামে। মৃত দুই বন্ধুর নাম অরুণ রুইদাস (৪৭) এবং ইমদাদুল সেখ (২৩)। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিত্সাধীন সেখ মণিরুল নামে একজন। তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলায়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করেছে চতুর্থ বন্ধু বংশী পণ্ডিতকে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অরুণ রুইদাস এবং বংশী পণ্ডিতের বাড়ি সাহাপুর গ্রামেই। মৃত ইমদাদুল সেখের বাড়ি বীরভূম জেলা জৌষ্ঠ ভবানীপুর গ্রামে। সম্প্রতি তিনি সাহাপুর গ্রামে আসেন রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৪জনেই রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। রবিবার গ্রামে কালীপুজো উপলক্ষ্যে স্থানীয় হোমিওপ্যাথ চিকিত্সক ডা. রাজকুমার ঘোষের কাছ থেকে এক বোতল ওষুধ কিনে খান ৪ বন্ধুই। তাতে তাদের ভাল নেশা হওয়ায় ফের সোমবার রাতে তাঁরা ওই চিকিত্সকের কাছ থেকে আরও ২টি বোতল কিনে খান। এই ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন অরুণ রুইদাস এবং ইমদাদুল সেখ। তাদের প্রথমে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে অরুণ রুইদাসকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন। ইমদাদুলের মৃত্যু হয় মঙ্গলবার রাতে জামালপুর হাসপাতালে। এই ঘটনায় পুলিশ বংশী পণ্ডিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। একইসঙ্গে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সক জামালপুরের বেত্রাগড়ের বাসিন্দা রাজকুমার ঘোষকে। তাঁর চেম্বার থেকে থুজা–২০০ –এর দুটি বোতল পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। যদিও এদিন মৃত অরুণ রুইদাসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪ বন্ধু মিলে বিষমদ খাওয়ার জন্যই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এব্যাপারে বর্ধমানের হোমিওপ্যাথ চিকিত্সক ডা.সৌমেন সিংহ রায় জানিয়েছেন, থুজা –২০০ নামক ওষুধ খেয়ে কারও মরার কথা নয়। তবে যেকোনো ওষুধই মাত্রাতিরিক্ত খেলে তার একটা প্রভাব ঘটতেই পারে। এক্ষেত্রে ঠিক কি ঘটেছে তা না জেনে বলা সম্ভব নয়। তবে যদি কেউ রেকটিফায়েড স্পিরিট অতিরিক্ত পরিমাণে খান তাহলে তার জীবনহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকতেই পারে।