E Purba Bardhaman

শিলাবৃষ্টিতে জমির ধান নষ্ট হওয়ায় আত্মঘাতী দুই ভাগচাষি

two sharecropper suicide due to the loss of paddy in hailstorm

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভাতার থানার বলগনায় কীটনাশক খেয়ে এক ভাগচাষি আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃতের নাম শেখ সইদুল হক (৩৮)। বুধবার দুপুরে জমিতে গিয়ে তিনি কীটনাশক খান। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে তাঁকে শহরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সেখানেই শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। শিলাবৃষ্টিতে ধান নষ্ট হওয়ার কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের দাবি। যদিও তা মানতে নারাজ পুলিস। পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিসের দাবি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে ভাগে বোরো চাষ করেন। চাষের জন্য স্ত্রীর ৪ ভরি সোনার গয়না বন্ধক রেখে টাকা ধার করেন। তাঁর ৫০-৬০ হাজার টাকা চাষের কারণে দেনা ছিল বলে পরিবারের দাবি। কয়েকদিন আগের শিলাবৃষ্টিতে জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মৃতের ভাই শেখ চঞ্চল বলেন, চাষের আয় থেকে দাদার সংসার চলত। শিলাবৃষ্টিতে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাদা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তার উপর দেনাশোধের দুশ্চিন্তা ছিল। ধান নষ্ট এবং দেনা শোধের দুশ্চিন্তায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে দাদা আত্মঘাতী হয়েছেন। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগের শিলাবৃষ্টিতে ভাতার ও আউশগ্রামে ধানের ক্ষতি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান ও রায়নার সভায় চাষিদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার ভাতারে পরিদর্শনে যান।
অন্য একটি ঘটনায় কাটোয়া থানার চন্দ্রপুরে কীটনাশক খেয়ে এক ভাগচাষি আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃতের নাম উত্তম দাস (৩২)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কীটনাশক খেয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাঁকে মন্তেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। রাতে তিনি মারা যান। শিলাবৃষ্টিতে ধান নষ্টের কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের দাবি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে ভাগে বোরো চাষ করেন। এছাড়াও দেড় বিঘা জমিতে তিনি তিল চাষ করেন। সাম্প্রতিক শিলাবৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়ে যায়। চাষের জন্য তিনি মহাজনের কাছে টাকা ধার করেছিলেন। মৃতের ভাই বিপদ দাস বলেন, দাদা ভাগচাষের পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শিলাবৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়ে যায়। চাষের জন্য দাদা কিছু টাকা মহাজনের কাছ থেকে ধার করেছিলেন। সংসারে অভাব চলছিল। তার জেরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে দাদা আত্মঘাতী হয়েছেন।

Exit mobile version