E Purba Bardhaman

রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নার্সিংহোমে ব্যাপক ভাঙচুর বর্ধমানে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কিডনি অপারেশন করতে গিয়ে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো সোমবার সকালে বর্ধমান শহরে। এদিন সকালে বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুরমাঠ কলেজ মোড় এলাকায় একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে স্থানীয় লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকার এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় নার্সিংহোমে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বর্ধমান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। জানা গেছে, মৃত যুবকের নাম বিকাশ সাউ (২৪)। বাড়ি লক্ষ্মীপুরমাঠ এলাকায়। বেশ কিছুদিন ধরেই ওই যুবক পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। কিছুদিন আগেও তার পেটে একটি অস্ত্রোপচার হয়। তারপরেও সে সুস্থই ছিল। সম্প্রতি ফের তার পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। এরপরই চিকিত্সকরা জানান, তার কিডনিতে পাথর হয়েছে অপারেশন করাতে হবে। যথারীতি গত সোমবার তাকে ভর্তি করা হয় লক্ষ্মীপুর মাঠের ওই বেসরকারী নার্সিংহোমে। রবিবার সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। মৃতের পরিবারের লোকজন দাবী করেছেন, অপারেশনের পরও তাঁরা বিকাশের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। কিন্তু এরপরই সোমবার সকালে আচমকাই তাঁদের কাছে খবর আসে বিকাশের হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে। এরপরই এলাকার মানুষ ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন। চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাঁরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান নার্সিংহোমে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এই অস্ত্রোপচারের জন্য এবং চিকিত্সার খরচ বাবদ তাঁদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এদিকে, সোমবার সকালে বিকাশের মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলেজ মোড় এলাকা। ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয় নার্সিংহোমের নিচের তলার সমস্ত জিনিসপত্র। ভাঙচুর করা হয় এক চিকিত্সকের গাড়িতেও। বহু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ফেলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বর্ধমান থানার পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় নার্সিংহোমের মালিক সেখ আলহ্বাজউদ্দিন জানিয়েছেন, চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। এমনকি তার সফল অস্ত্রোপচারও করা হয়। কিন্তু এরপরই সে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। তাঁরা চেষ্টা চালালেও সফল হননি। ভাঙচুরের ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। উল্লেখ্য, রোগী মৃত্যু নিয়ে সাম্প্রতিককালে বর্ধমান শহরের একাধিক নার্সিংহোমে এইভাবেই ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বারবার এই হামলার ঘটনায় নার্সিংহোমের মালিকরা নিরাপত্তার দাবীও তুলেছেন। যদিও ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এই ধরণের ঘটনায় চিকিত্সকের ওপর কিংবা চিকিত্সা কেন্দ্রে হামলা চালানোর ঘটনায় রাশ টানতে একাধিক নির্দেশিকাও জারী করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেইসমস্ত নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করেই চলছে তাণ্ডব। এমনকি এদিন যখন নার্সিংহোমে তাণ্ডব চালানো হয়েছে সেই সময় ওই নার্সিংহোমের ওপরতলায় রোগী ও রোগীপক্ষের লোকজন রীতিমত আতংকিত হয়ে পড়েন।

Exit mobile version