E Purba Bardhaman

ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল টেট পরীক্ষার্থীর বাবার

West Bengal TET examinee's father's life was saved by the action of the traffic police

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- টেট পরীক্ষা দিতে আসা এক পরীক্ষার্থীর বাবা গুরুতর অসুস্থ হওয়া এবং স্থানীয় দোকানদার ও কর্তব্যরত ট্রাফিক ওসি এবং সিভিক ভলেণ্টিয়ারদের দ্রুত চেষ্টায় আপাতত প্রাণে বাঁচলেন ওই ব্যক্তি। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া ওই ব্যক্তির নাম দেবনারায়ণ বোস (৬৪)। কালনার কাছারিপাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ি। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসায় তিনি বড়সড় বিপদের হাত থেকে বেঁচেছেন। জানা গেছে, এদিকে, এদিন কালনার কাছারী পাড়া থেকে বর্ধমানের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসেন কৌশিক বোস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা দেবনারায়ণ বোসও। বর্ধমান শহরের ট্রাফিক ওসি চিন্ময় ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলের সামনের একটি চায়ের দোকানে ছিলেন দেবনারায়ণ বোস। আচমকাই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দ্রুততার সঙ্গে দৃশ্যতই গ্রীণ করিডর করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসা। আপাতত তিনি বিপদমুক্ত বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। দোকানদার মিনু ঘোষ এদিন জানিয়েছেন, ছেলে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবার পর দেবনারায়ণ বোস তাঁর দোকানে চপ মুড়ি খান। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত সিভিক ভলেণ্টিয়ার কল্যাণ রায় সহ অন্যান্যরা ছুটে আসেন। সেই সময় মিউনিসিপ‌্যাল বয়েজ স্কুলের সামনে যান নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ছিলেন ট্রাফিক ওসি চিন্ময় ব্যানার্জ্জী। দ্রুততার সঙ্গে দেবনারায়ণ বোসের মাথায় ও ঘাড়ে জল দেন মিনু ঘোষ। সিভিক ভলেণ্টিয়াররাও দেবনারায়ণবাবুর বুকে ম্যাসাজ শুরু করে দেন। এরপরই একটি টোটোয় চাপিয়ে কার্যত গ্রীণ করিডরের মতই তাঁকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দোকানদার মিনুদেবী জানিয়েছেন, যেভাবে এদিন সকলে চেষ্টা করেছেন তারজন্যই ওই ব্যক্তি প্রাণে বেঁচে গেলেন। তিনি জানিয়েছেন, দেবনারায়ণবাবুর ফোন থেকেই তাঁর বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেবনারায়ণবাবুর স্ত্রী জানিয়েছেন, এর আগেও দেবনারায়ণবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কিছুদিন আগেই দেবনারায়ণবাবুর বাবা মারা যান। এমনকি এদিন বাসে ছেলে টেট পরীক্ষার্থী কৌশিক বোসকে নিয়ে আসার সময় বাসের মধ্যেই অসুস্থতা বোধ করছিলেন। অন্যদিকে, ৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া টেট পরীক্ষা মোটামুটি নির্বিঘ্নেই কেটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের ৫৬ টি সেন্টারে ৩১ হাজার ৭৭৪ জন পরীক্ষার্থী টেট পরীক্ষার্থীর জন্য প্রশাসনিক তত্পরতা ছিল তুঙ্গে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এদিন গোটা জেলায় পরীক্ষা দিয়েছেন ২৯ হাজার৭০জন। অনুপস্থিত ছিলেন ২ হাজার৭০৪ জন। উপস্থিতির হার ৯১.৪৮ শতাংশ। প্রতিটি সেন্টারেই প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীদের চেকিং করার পর তবেই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিয়েছেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রেই ছিল পর্যাপ্ত পুলিশী ব্যবস্থা। এমনকি যথেষ্ট সংখ্যায় মহিলা পুলিশও মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরী ছিল ১১ টি কুইক রেসপন্স টিম। এছাড়াও বর্ধমান স্টেশন সহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন, বাসস্ট্যান্ট ও মোড় গুলিতে মোতায়েন করা ছিল পুলিশবাহিনী। খোলা হয় জায়গায় জায়গায় হেল্প ডেস্ক। জেলা প্রশাসশনের তরফে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য বাড়তি বাসের ব্যবস্থা করা হয়। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে এদিন রাস্তায় রীতিমত টহল দিয়েছে সিভিক ভলেণ্টিয়াররাও।

Exit mobile version