E Purba Bardhaman

গ্রামবাসীদের অজান্তে শয়ে শয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্ট-এটিএম কার্ড, বড় কেলেংকারী খণ্ডঘোষে

Without the permission of the villagers, hundreds of bank account-ATM cards have been created in their name, the big scandal in the village of Khataghosh. AXIS Bank

খণ্ডঘোষ (পূর্ব বর্ধমান) :- রেশন কেলেংকারীর তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা অনেক ভূয়ো অ্যাকাউণ্টের হদিশ পেয়েছেন বলে ইতিমধ্যেই ইডির পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে। আর এবার চাঞ্চল্যকর ঘটনার হদিশ মিলল খোদ পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানা এলাকার কালনা গ্রামের মুসলিম পাড়া, বাগ্দী পাড়া (দীঘির পাড়) এলাকায়। এই দুই পাড়ায় কয়েকশো বাসিন্দাদের নামে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউণ্ট খোলা হয়েছে যে শুধু তাইই নয়, তাঁদের নামে চলে এসেছে এটিএম কার্ডও। অথচ এই অ্যাকাউণ্ট খোলার ব্যাপারে গ্রামবাসীরা কিছুই জানেন না। সম্প্রতি ক্যুরিয়রের মাধ্যমে তাঁদের কাছে এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টের ব্যাপারে কাগজপত্র এবং এটিএম কার্ড আসতেই রীতিমত আতংকিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় একাধিক অভিযোগও দায়ের করেছেন গ্রামবাসীরা। গ্রাহকের অজান্তে কিভাবে এই অ্যাকাউণ্ট হল, কারা এই অ্যাকাউণ্ট খুলতে সাহায্য করলেন তা নিয়ে যখন রীতিমত আতংক ছড়ায় এই দুই পাড়া তথা গ্রামে, সেই সময় গ্রামবাসীরা খবর পান এই সমস্ত অ্যাকাউণ্টে তাঁদের অজান্তেই হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন। আর তাতেই বেড়েছে গ্রামবাসীদের আতংক। গ্রামবাসী সেখ মতিউর রহমান জানিয়েছেন, আমাদের গ্রামের প্রায় ১২০-১৩০ জন ওই ব্যাংকে কোনও অ্যাকাউন্ট খোলেনি। কিন্তু তাঁদের নামে কুরিয়ারে এটিএম কার্ড এসেছে। ক্যুরিয়রের কর্মী গোটা ৪০টা বাড়িতে এটিএম কার্ড বিলি করেন। বাকিগুলো গ্রামেরই এক বাসিন্দার বাড়িতে দিয়ে গিয়েছিলেন। যাঁদের নামে এটিএম তাঁরা ওনার কাছ থেকে এটিএম কার্ডগুলি নিতে চান, কিন্তু দেননি। কুরিয়ারে যোগাযোগ করা হলে, সেখান থেকে এসে জানিয়ে দেওয়া হয় কোন বাড়িতে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মালিক অস্বীকার করেন। এনিয়ে ঝামেলা হয়। থানায় অভিযোগ করা হয়। জেলাশাসক ও ব্যাংকেও অভিযোগ করা হয়। ব্যাংক ম্যানেজার জানান, আমি কিছু জানিনা। আগে যে ম্যানেজার ছিলেন তিনি জানেন বলে ব‌্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়। অন্যদিকে, যাঁরা কার্ড পেয়েছেন তাঁদের সই মেলেনি, এমনকি একাউণ্টে দেওয়া ফটোগুলোও ঠিক নয়। কেউ ১০০ দিনের কাজ করছেন, কেউ গরুর খড় কাটছেন, কেউ রান্না করছেন, কেউ মাঠে কাজ করছেন -এই ধরনের ফটো ব্যবহার হয়েছে। তাঁদের সন্দেহ এই ঘটনায় গ্রামের মানুষই যুক্ত। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান শহরের ব্রাঞ্চ থেকে ওই কার্ডগুলি এসেছিল। দ্বিতীয় বার আবার আসে। গ্রামবাসীরা ব্রাঞ্চে যান, কিন্তু তাঁদের কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ওখান থেকে বলা হয় আপনারাই অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। অথচ ব্যাংক থেকেই তাঁরা জেনেছেন, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর পরিমানে লেনদেন হয়েছে। গ্রামবাসী রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এব্যাপারে এস ডি ও, বি ডি ও, এস পি, ডি এম সবাইকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো কিছুই তাঁরা জানতে পারেননি। এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে অল ইণ্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এরকম ঘটনা হয়ে থাকলে তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এব্যাপারে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।


Exit mobile version