কালনা (পূর্ব বর্ধমান) :- ট্রেনের ধাক্কায় সহকর্মী রেল ঠিকা শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেললাইনের ধারেই পরে দেহ, রেলের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কাজে ব্যস্ত থাকলেন অন্যান্য শ্রমিকরা। দুর্ঘটনার প্রায় ৪ ঘণ্টা পর দেহ জিআরপি উদ্ধার করে বলে অভিযোগ। রেলের ‘অমানবিকতায়’ স্তম্ভিত স্থানীয়রা। কর্মরত অবস্থাতেই রেলের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ঠিকা শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার আনুমানিক সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ডাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ৫৮/১২ মাইল দিয়ে পাস হয়। সেই সময় কালিনগর ও সমুদ্রগড়ের মাঝামাঝি জায়গায় রেলের ঠিকা শ্রমিকেরা রেলের ট্রাকে কাজ করছিলেন। তখনই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজ করার সময় উভয় দিক থেকে ট্রেন চলে আসায় সকলেই লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান, কিন্তু একজন সরতে পারেন নি। কাজ করতে গিয়েই দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ওই শ্রমিকের। মৃত ঠিকা শ্রমিকের নাম অভিজিৎ টুডু (২৬)। তাঁর বাড়ি কালনা ১ ব্লকের নান্দাই দুর্গাপুরে। সকাল সাড়ে দশটায় দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া শ্রমিকের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় আনুমানিক বেলা তিনটের সময় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই দীর্ঘ সময় ওই মৃত শ্রমিকের দেহ রেল লাইনের ওপর পরে থাকে। আরো মর্মান্তিক ঘটনা এই যে মৃত শ্রমিকের দেহ রেল লাইনের পরে থাকা অবস্থায় কর্তব্যে অবিচল থেকে বাকি শ্রমিকেরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যান। তাঁদের কাজের সঙ্গীকে হারিয়েও তাঁরা কর্ম বিরতি পালন করেনি বরং উল্টে তাঁরা তাঁদের কাজ চালিয়ে গেছেন শুধুমাত্র রেল ও পরিবার প্রতিপালনের স্বার্থে। আর এই ঘটনা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, রেলের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে যারা জানপ্রাণ লাগিয়ে পরিশ্রম করেন তাঁদের প্রাণের কি কোন দাম নেই? দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর পরেও এত দীর্ঘ সময় দেহ কেন রেললাইনে পরে থাকলো? রেল কর্তৃপক্ষের কাছে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শ্রমিকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা দানেশ সেখ ও সুজিত মন্ডলদের অভিযোগ, একটা মানুষ যিনি রেলেরই কাজ করতে গিয়ে রেলের ধাক্কায় মারা গেলেন তাঁর প্রতি ন্যূনতম মানবিকতা দেখাবে না রেল। একটা মানুষের দেহ ৪ ঘণ্টা ধরে রেল লাইনের ধারে পরে থাকবে এটা ভাবাই যায় না। পরে আমরা প্রতিবাদ করাতে দেহ তুলে নিয়ে যায় রেল। কিন্তু যারা রেলের নিরাপত্তা জন্য কাজ করেন তাঁদের নিরাপত্তা কে দেবে? কেন এই অমানবিক আচরণ, রেল কি তার উত্তর দেবে।