E Purba Bardhaman

তৃণমূল নেতারা জোর করেই বর্ধমান রেলওয়ে উড়ালপুলের ব্যারিকেড খুলে দিলেন, ফের হবে উদ্বোধন

Yesterday the state gov inaugurated the Burdwan Railway overbridge. But the ROB was still closed today. State police have stopped traffic on the ROB

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান):- বর্ধমান-কাটোয়া রেলওয়ে উড়ালপুল নিয়ে নতুন করে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন তৃণমূলের নেতারা। বুধবার সন্ধ্যে নাগাদ রীতিমত মিছিল করে আচমকাই রেলওয়ে ওভারব্রীজের অ্যাপ্রোচ রোডের মুখে থাকা রেলের ব্যারিকেডকে সরিয়ে দিলেন তাঁরা। আর তারপরেই হৈ হৈ করে শুরু হয়ে গেল যান চলাচল। যা নিয়ে রীতিমত ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিল। দেখা দিল নতুন করে বিতর্কও । কারণ ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝুলন্ত রেল সেতুর দ্বিতীয়বারের জন্য উদ্বোধন হবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায়। উদ্বোধন করবেন রেল দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ চান্নাবাসাপ্পা অঙ্গদি। বুধবারই পূর্ব রেলের এডিশনাল ডিভিশনাল ম্যানেজার এন এন মীনা পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসককে এব্যাপারে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। বলা হয়েছে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমান ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদস্থ আধিকারিকরাও। এদিকে, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর নবনির্মিত উড়ালপুলের উদ্বোধন নিয়ে এদিন ট্যুইটারে রীতিমত ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ, বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিং অহলুবালিয়াও। দিলীপবাবু ট্যুইট করে জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অদ্ভূত রকমের একটি ইঁদুর দৌড় করছেন। এর আগেও পশ্চিম বর্ধমানের জাতীয় সড়কের বাইপাস উদ্বোধন বিজেপি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র করার আগেই মলয় ঘটককে দিয়ে করিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে প্রধানমন্ত্রীর সার্কিট বেঞ্চের শিলান্যাস অনুষ্ঠানের আগেই তিনি নিজে গিয়ে তার শিলান্যাস করেছেন। ফের পূর্ব বর্ধমানের এই উড়ালপুল নিয়েও একই কাজ করলেন। আসলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়ন চান না। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নকে তিনি সহ্য করতে পারছেন না। এবারও তাই রেল দপ্তরের পক্ষ থেকে উড়ালপুল উদ্বোধনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা সত্ত্বেও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে দিলেন এদিকে, মঙ্গলবার মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রাম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই রেলব্রীজের উদ্বোধন করলেও এবং বর্ধমানে তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ফিতে কেটে তার দ্বিতীয়বার উদ্বোধন হবে না বললেও বুধবার প্রায় সন্ধ্যে পর্যন্ত খোদ রাজ্য পুলিশ তথা বর্ধমান পুলিশই উড়ালপুলে কাউকে উঠতে দেননি। ফলে নতুন করে এনিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। যদিও এদিন সন্ধ্যে নাগাদ সেতুর মুখের ব্যারিকেডগুলি জোর করে সরিয়ে দেয় তৃণমূলের নেতা-সমর্থকরা। আর এরপরেই হাল্কা যানবাহন শুরু হয়ে যায়। যা নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ল। কিন্তু এদিন দেখা গেল ব্রীজ ও ব্রীজ সংলগ্ন বেশ কিছু কাজ করছেন কর্মীরা। এদিন এই কাজ করা শ্রমিকরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ঘটা করে ব্রীজের উদ্বোধন হবার পরই অত্যুত্সাহী মানুষ ইতিমধ্যেই পানের পিক ফেলে ব্রীজের দেওয়ালকে কলঙ্কিত করেছেন। এদিন তৃণমূল নেতা মেহেবুর রহমান, বর্ধমান পুরসভার ৪নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহম্মদ সেলিম প্রমুখদের নেতৃত্বে প্রচুর তৃণমূল কর্মী এই ব্যারিকেড সরিয়ে দেন। মেহেবুর রহমান জানিয়েছেন, কালকেই এই ব্রীজের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও সাধারণ মানুষকে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। তাই সাধারণ মানুষই এগিয়ে এসে ব্যারিকেড সরিয়ে দিয়েছেন। এজন্য কোনো দলকে এগিয়ে আসতে হয়নি। যদিও এদিন রাতেই উড়ালপুলের অ্যাপ্রোচ রোডগুলির মুখে ফের ব্যারিকেডগুলি লাগিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে রেল দপ্তরের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, রেলব্রীজ নিয়ে তৈরী হওয়া বিতর্কে বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন, যেহেতু দুটি সরকারের যৌথ বিষয়। তাই তাঁরা আশা করেছিলেন দুটি সরকারের প্রতিনিধিরাই জনগণের জন্য এটা উন্মুক্ত করুঊক। কিন্তু যেভাবে রাজ্য সরকার হঠাত করেই উদ্বোধন পর্ব সারলেন একতরফাভাবে তাতে তাঁরা বিস্মিতই হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এরফলে সৌভ্রাতৃত্ব নষ্ট করলেন তাঁরা। রেলব্রীজ নিয়ে কেন ভাগাভাগি হবে ? সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, যিনি একদা রেলমন্ত্রী ছিলেন তাঁর কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না। রেলদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রাখা উচিত ছিল।

Exit mobile version