বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ফের গভীর রাত্রে ৬ বার ফোন করে পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুকে খুনের হুমকি দিল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা। রবিবার রাত্রি প্রায় ২ টো থেকে ১৫ মিনিট ধরে লাগাতার দেবু টুডুকে খুনের হুমকি দিয়ে ফোন করা হয়। প্রথম ফোনটি পুরুষ কণ্ঠস্বর। দেবু টুডু জানিয়েছেন, প্রথম ফোনটিতে তিনি হ্যালো বলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন। ওই ফোনের পর আরও ৩বার ফোন আসে। বাকি ফোনগুলি তিনি ধরেননি। দেবু টুডু জানিয়েছেন, রবিরার রাতে ৪ বার তাঁকে একই নাম্বার থেকে ফোন করা হয়। সোমবার তিনি যথারীতি জেলা পরিষদে নিজের চেম্বারে বসে থাকার সময় অন্য একটি নাম্বার থেকে ফের তাঁকে খুনের হুমকি দিয়ে ২ বার ফোন করা হয়। এরপর তিনি গোটা বিষয়টি জানান জেলা পুলিশের সাইবার সেলকে। সঙ্গে সঙ্গে সাইবার পুলিশ এসে তাঁর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যান। দেবু টুডু জানিয়েছেন, এর আগেও ১৮ আগষ্ট রাত্রে তাঁকে ২৫ বার ফোন করা হয় বিভিন্ন ফোন নাম্বার থেকে। প্রতিটি ফোনেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় মেরে ফেলার। তিনি জেলা পুলিশের পাশাপাশি গোটা বিষয়টি জানান দলীয় উচ্চ নেতৃত্বকেও। উল্লেখ্য, ১৮ অগষ্টের ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান জেলা সাইবার পুলিশ তদন্তে নেমে নদীয়ার পলাশিপাড়া থানার পাঁচদাড়া গ্রাম থেকে সঞ্জীব ঘোষ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তারও করে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ওই যুবকের ফোন নাম্বার ব্যবহার করে ওই ফোনগুলি করা হয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তার করে এই ঘটনায় আরও কারা কারা জড়িত তা নিয়ে পুলিশী তদন্ত জারী রয়েছে। তারই মাঝে ফের রবিবার রাতে তাঁকে একই কায়দায় ফোন করে খুনের হুমকি দেওয়া রীতিমত চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। কি কারণে দফায় দফায় এই খুনের হুমকি তা নিয়ে ক্রমশই রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। খোদ জেলা পরিষদের অন্দরে এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমত চর্চাও শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মকর্তা তথা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মতবিরোধের জেরে কার্যত জেলা পরিষদের উন্নয়নমুলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি জেলা পরিষদের টেণ্ডার নিয়ে জেলা পরিষদের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিতর্ক তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও পৌঁছায়। তার জেরেই সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়াকে দেবু টুডুর সাথে পরামর্শ করে চলার নির্দেশ দিয়ে যান। জেলা পরিষদকে ঘিরে প্রশাসনিক দুই কর্তার মধ্যে এই বিরোধের মাঝেই তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সংগঠনের কাজে দেবু টুডুকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে যান মমতা বন্দোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে দেবু টুডুকে অধিক গুরুত্ব দেবার কারণেই কি তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বারবার – এই প্রশ্নই এখন রীতিমত চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা পরিষদে। একইসঙ্গে অজানা আশংকায় ভুগতে শুরু করেছেন অনেকেই। খোদ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতিকে খুনের হুমকি দেওয়া হলে বাকিদের কি অবস্থা হবে তা নিয়েও শংকিত নেতারা।