পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুকে খুনের হুমকি
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রবিবার গভীর রাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে লাগাতার খুনের হুমকি দেওয়া হল পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুকে। গোটা বিষয়টি নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিল জেলা পরিষদের অন্দরে। কারা এই খুনের হুমকি দিয়েছে তা খোলসা করে বলতে চাননি দেবু টুডু। তিনি জানিয়েছেন, একটি শক্তিশালী বড় চক্রের কাজ এটা। রবিবার রাত্রি প্রায় ১টা বেজে ৩৮ মিনিট থেকে ১৬টি আলাদা আলাদা ফোন নাম্বার থেকে তাঁকে ফোন করা হয়। রাত্রি ৩ টে বেজে ১৫ মিনিট পর্যন্ত এই ভিন্ন ভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করা হয়। প্রতিটি ফোন থেকেই তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। ফোনের অপরপ্রান্তে পুরুষ ও মহিলা কণ্ঠস্বর ভেসে আসছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ফোনের ধরণ শুনে তাঁর ধারণা গোটা বিষয়টি একটি রেকর্ড করে তারপর তা শোনানো হয়েছে। যদিও যে কণ্ঠস্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল তা তাঁর পরিচিত কিনা সে বিষয়টিও তিনি বলতে চাননি। ফোন করেই অপরপ্রান্ত থেকে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়। প্রায় দেড় মিনিট ধরে একনাগাড়ে তাঁকে গালিগালাজ করার পর তাঁকে গুলি করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, এরপর থেকেই একনাগাড়ে অন্য নাম্বার থেকে ফোন আসতেই থাকে। কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। কারা এই কাজ করল এদিন তা পরিষ্কার করে না বললেও তিনি জানিয়েছেন, একটি বড় চক্র এর পিছনে কাজ করছে। তিনি পুলিশকে সব জানিয়েছেন। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে তাঁর বিশ্বাস। এরই পাশাপাশি এদিন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকেও গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন দেবু টুডু। এই ঘটনায় তিনি বর্ধমানের জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার সহ রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বকেও গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপারকে লেখা চিঠিতে দেবু টুডু জানিয়েছেন, এই ধরণের অপ্রত্যাশিত ঘটনা তাঁর কাছে মানষিকভাবে পীড়াদায়ক এবং এতে তিনি যথেষ্ট উদ্বিগ্নও। গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার আবেদনও জানিয়েছেন। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, এই ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। তিনি খবর পাওয়ার পরই জেলা পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাশাসক জানিয়েছে্ন, মোট ১৬টি নাম্বার থেকে ফোন করা হয়েছিল। আসল অপরাধীকে খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, জেলা পরিষদ পরিচালনার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে দেবু টুডুর সঙ্গে মত বিরোধ তৈরী হয়। বিশেষ করে জেলা পরিষদের টেণ্ডার নিয়ে এই সংঘাত চরমে ওঠে। টেণ্ডার সংক্রান্ত নিয়ম না মানায় তিনি সেই টেণ্ডারগুলি কার্যত আটকে দেন। ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় জেলা পরিষদের অন্দরে। এমনকি জেলা পরিষদের কর্মী মহলেও রীতিমত চর্চার বিষয়ও হয়ে দাঁড়ায় এই ঘটনা।সম্প্রতি গোটা বিষয়টি নিয়ে খোদ দলনেত্রীও সকলকে মিলেমিশে নিয়ম মেনে কাজ করার নির্দেশ দেন। আর তারপরেই সহকারী সভাধিপতি তথা প্রাক্তন সভাধিপতি দেবু টুডুকে ফোনে খুনের হুমকি দেওয়ায় ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে শহর জুড়ে।এই ঘটনায় তিনি আলাদা করে বাড়তি সিকিউরিটি নেবেন কিনা সে বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনের ওপরই তিনি ছেড়ে দিয়েছেন।