রায়না ও বর্ধমান, ৩ ফেব্রুয়ারিঃ- ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রায়না। সরকারী জমির ওপর একটি অঙ্গনওয়াড়ি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে রীতিমত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের। বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গোলাম জার্জিস জানিয়েছেন, রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ এই সংঘর্ষ ঘটে। এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে তাঁদের প্রায় ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং দুজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গোলাম জার্জিস জানিয়েছেন, রায়না থানার নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া গ্রামে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই জায়গা খোঁজা চলছিল। এরপর কুলিয়া গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে সরকারী খাস জমির সন্ধান মেলে। ওই প্রায় ২ কাঠা জায়গার ওপরই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা এলাকার কংগ্রেস এবং সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ওই জায়গা তাঁর নিজস্ব বলে দাবী করতে থাকেন। একইসঙ্গে ওই নির্মাণকাজেও বাধা দিতে থাকেন। এদিকে, এই সমস্ত বাধা সত্ত্বেও কাজ চালু হয়ে যাওয়ায় এবং রবিবার যথারীতি সকাল থেকে রাজমিস্ত্রীরা কাজ করতে থাকার সময় স্থানীয় কংগ্রেস এবং সিপিএম সমর্থকেরা যৌথভাবে কাজে বাধা দিতে শুরু করেন। এই ঘটনা শোনার পরই স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে হাজির হলে এবং সরকারী কাজে বাধা দেবার প্রতিবাদ জানাতে গেলে তাঁদের ওপর লাঠি, রড নিয়ে আক্রমণ চালায় কংগ্রেস এবং সিপিএমের যৌথবাহিনী। এই ঘটনায় আহত হন সেখ আসগর, লিবো সোরেন, সেখ নূর মহম্মদ, গোলা ওরফে লুৎফর বেগম। এঁদের মধ্যে লিবো সোরেন এবং সেখ আসগর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের এদিনই সন্ধ্যেয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গোলাম জার্জিস জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মোট ৭ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে রায়না থানায়। এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে এদিন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আজিজুল হক মন্ডল জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই। বর্গা জমিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকেদের মধ্যে একটি বিবাদ হয়েছে। কিন্তু সেটাকেই তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক রং চাপিয়ে ফায়দা লুঠতে চাইছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। আজিজুল হক মন্ডল জনিয়েছেন, ওই এলাকায় কংগ্রেসের ক্ষমতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় এই রাজনীতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে রায়নার সিপিএম বিধায়ক বাসুদেব খাঁ জানিয়েছেন, একটা গোলমালের খবর পাওয়া গেছে। তবে কী কারণে এই গোলমাল সে সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে রায়নার সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মীর্জা আখতার আলি এদিন জানিয়েছেন, স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা দীর্ঘ কয়েক বছর আগেই আদিবাসীদের একটি জায়গা বিক্রি করেন। কিন্তু ওই জমি এখনও রেজিষ্ট্রি হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে, ওই জমি থেকে আচমকাই আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে। আদিবাসীরা এরই প্রতিবাদ করলে তাদের দমন করার চেষ্টা করা হয়। আখতার সাহেব জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মিথ্যাভাবেই সিপিএমকে জড়ানো হচ্ছে।