বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সোমবার বর্ধমান পুরসভার ৩৪টি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন বামফ্রণ্টের প্রার্থীরা। এদিন বর্ধমানের পার্কাস রোডের সিপিআইএম জেলা অফিস থেকে বামফ্রণ্টের প্রার্থীদের মিছিল করে নিয়ে আসেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়, তাপস সরকার প্রমুখরা। নিরাপত্তাজনিত কারণে এদিন বাম-প্রার্থীদের প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে আসা হয় পিছন দিক দিয়ে বাদামতলার রাস্তা ধরে। অশান্তি এড়াতে এদিন মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। বর্ধমান পুরসভার ৩৫ আসনের মধ্যে ৩৪ টি আসনে বামফ্রন্টের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন প্রার্থীই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বর্ধমান পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পুরসভায় বামফ্রন্টের ৩৪ টি মনোনয়নের মধ্যে সি.পি.আই.এম. দিয়েছে ২৯ টি আসনে, ফরোওয়ার্ড ব্লক দিয়েছে ৩ টি আসনে এবং আর.এস.পি. দিয়েছে ২ টি আসনে।
বর্ধমান পুরসভার পাশাপাশি মেমারী, গুসকরা, কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাট পুরসভার বামফ্রণ্টের প্রার্থীরাও এদিন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে। গুসকরা পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৬ টি আসনের মধ্যে এদিন ১৪ টিতে সি.পি.আই.এম. প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মেমারী পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৬ টি আসনেই এদিন সি.পি.আই.এম. প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কালনা পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৮ টি আসনের মধ্যে এদিন ১৩ টিতে সি.পি.আই.এম. প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কাটোয়া পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০ টি আসনের নির্বাচনে এদিন সি.পি.আই.এম. প্রার্থীর ২৪ টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। দাঁইহাট পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ টি আসনের নির্বাচনে এদিন সি.পি.আই.এম. প্রার্থীর ২১ টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এছাড়াও দাঁইহাটে কংগ্রেস এবং নির্দল ১ জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কালনা পুরসভার বিজেপির ২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কাটোয়া পুরসভার ১৩ জন তৃণমূল কংগ্রেস এবং ৮ জন অন্যান্য দলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার বর্ধমান পুরসভার বাকি থাকা ৩৪ টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন, বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক খোকন দাস। সোমবার কার্যত পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ ছিল মিনি পার্টি অফিস। ৩৫টি আসনের অধিকাংশ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা এদিন জেলা পরিষদে হাজির হন। মনোনয়নের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূরণ করার কাজ করা হয়। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকে ১৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন খানের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ চললেও এদিন সাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, যাঁরা বিক্ষোভ করছেন তাঁরা না জেনে বুঝেই কারও কথায় প্ররোচিত হয়েই এই কাজ করছেন। যদিও দলের তরফ থেকে তাঁকেই মনোনয়নপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে। তিনি এদিন মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের আবহেই নির্দল তথা গোঁজ প্রার্থী হিসাবে কেউ কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করছেন কিনা তা নিয়ে রীতিমত নজরদারী শুরু করে দিল জোড়াফুল শিবির। যে সমস্ত নেতৃত্বের মধ্যে বিক্ষোভের আঁচ দেখা গেছে সকাল থেকে সন্ধ্যে তাঁদের গতিবিধির ওপর নজরদারী চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।