গদ্দারি তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছ থেকেই শিখেছেন – মুকুল রায়
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে ভারতবর্ষের আপামর মানুষের আবেগের জয় হল বলে মন্তব্য করে গেলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়। মঙ্গলবার দুদিনের বর্ধমান জেলায় বিজেপির সাংগঠনিক কাজ খতিয়ে দেখার সফরে এসে মুকুল রায় জানান, পুলওয়ামায় পাকিস্তানী জঙ্গীদের ভারতীয় ৪৯জন সেনাকে যে হত্যা করেছিল, তারই একটা প্রত্যাঘাত চাইছিল ভারতবর্ষের আপামর মানুষ। গোটা দেশ জুড়ে এই আবেদন উঠেছিল। আর তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সেনাকে এব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আর তারপরেই এই প্রত্যাঘাত। এই প্রত্যাঘাতকে ভারতবর্ষের মানুষের আবেগের জয় বলে উল্লেখ করেছেন মুকুল। আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই প্রত্যাঘাতের কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে মুকুল রায় জানিয়েছেন,এক্ষেত্রে কোনো রাজনীতি নয়, দেশের স্বার্থে মানুষ চাইছিলেন একটা শক্তপোক্ত কড়া পদক্ষেপ। আর সেটাই করে ভারতবর্ষের মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন মোদী সরকার। একইসঙ্গে ভারতবর্ষে যে একটা স্থায়ী সরকার মোদীজিই দিতে পারেন তাও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। নাম না করেই এদিন মুকুল রায় বিঁধেছেন তৃণমূল নেতা–নেত্রীদের। তিনি জানিয়েছেন,পুলওয়ামা কাণ্ডের পর অনেকেই এমন মন্তব্য করছিলেন যে বোঝাই যাচ্ছিল না তাঁরা পাকিস্তানের সমর্থক কিনা। বারে বারেই মুকুল রায়কে নাম না করেই তৃণমূলের নেতা–নেত্রীরা গদ্দার বলে যে উল্লেখ করেছেন এদিন তারও পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুকুল রায়। মঙ্গলবার বর্ধমানে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায় বলেছেন, গদ্দারিটা তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছেই শিখেছেন। কংগ্রেসের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় গদ্দার বললেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধীর পাশে বসছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাহলে কেন তিনি কংগ্রেসে ফিরে যাচ্ছেন না। তিনি তো কংগ্রেস ছেড়েই তৃণমূল গড়েছেন। প্রসঙ্গত,এদিন মুকুল রায় জানিয়েছেন, আইপিএস অফিসার গৌরব দত্ত আত্মহত্যা করেছে্ন। আত্মহত্যার জন্য তিনি সরাসরি সুইসাইডাল নোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কেই দায়ী করেছেন। মুকুল রায় বলেছেন, অন্য যে কোনো আত্মহত্যার ঘটনায় এই ধরণের সুইসাইডাল নোট পেলেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন হল না, কেন একটা ডায়রীও হল না –প্রশ্ন তুলেছেন মুকুল রায়। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই ঘটনার অবশ্যই তদন্ত হবে। মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন – এই প্রসঙ্গে মুকুলে রায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছেন, বাংলার বাইরে ভোটে লড়ে মমতা ব্যানার্জি একটা সিট জিতে দেখান। তাহলে মানব তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। জামানত বজায় রেখে দেখান তিনি। তিনি বলেন নির্বাচনে তৃণমূল ২০ টি সিট পাবে না পাবে কিনা সন্দেহ। এদিন বর্ধমান জেলার সাংগঠনিক পরিকাঠামোকে চাঙ্গা করতে মুকুল রায় বর্ধমানে এসেই সোজা চলে যান বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেন তিনি। পরে বর্ধমানের একটি সভাঘরে দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। এই বৈঠকেই মুকুল রায় কর্মীদের চাঙ্গা করতে বলেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিষয়টা তিনি ভালই জানেন। জানেন ওদের কোথায় কি ফাঁকফোকর। তাই চিন্তিত হবার কিছু নেই। ২০১৯ সালের নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সেই নির্বাচনেই বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৩০টি আসন পাবেই। এদিকে, এদিনই তিনি গলসী, রায়না সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করেন।